পূর্বসূরিদের পথেই হাঁটলেন বিরোধী দলনেতা পদে উত্তরসূরি শুভেন্দু অধিকারী। কারণ শুভেন্দু অধিকারী সবসময় শাসকদলেই ছিলেন। বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই এই পদে আসীন হয়ে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারছেন না। রাজ্য সরকার তথা নানা ইস্যুতে সোচ্চার হলেও শুভেন্দুকে কেউ পাত্তা দিচ্ছেন না। এই বিষয়টি অবশ্য তিনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে গোপনে বলেছেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু এখন তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাই নিজের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে এবার পাঠ নিতে শুরু করলেন তিনি। বিজেপি এই রাজ্যের বিধানসভায় প্রথম এমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় এসেছে। শুভেন্দুর গুরুত্ব বাড়াতেই ইয়াস পর্যালোচনা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ডেকে নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ সফল হওয়া যায়নি মুখ্যমন্ত্রীর দাপুটে ভূমিকায়। তাই মনোযোগী ছাত্রের মতো পরিষদীয় রাজনীতির মারপ্যাঁচ শিখছেন তিনি।
দিল্লির লোকসভা হোক অথবা রাজ্য বিধানসভা, অনেক মন্ত্রী এবং বিরোধী দলের প্রধানদের কাজে পিছন থেকে সাহায্য করেন তাঁদের ব্যক্তিগত সচিবরা। আগে যেমন আপ্ত–সহায়ক পদটি ছিল। প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আপ্ত–সহায়ক ছিলেন জয়কৃষ্ণ ঘোষ। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আপ্ত–সহায়ক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। রাজ্য বিধানসভায় তেমনই একজন হলেন প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়। দীর্ঘদিন ধরে পরিষদীয় রাজনীতির অলিন্দে থাকা এই মানুষটি আজ থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত সচিব হলেন।
তিনি আগে আব্দুল মান্নানের ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে কাজ করেছেন প্রদীপবাবু। তবে রাজ্য বিধানসভায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁর। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা সিদ্ধার্থ শংকর রায়ের সময় থেকে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সচিব হিসেবে কাজ করছেন। প্রাজ্ঞ প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভা থেকে অবসর নিলেও পরবর্তীকালে মানস ভুঁইয়া যখন কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা এবং আব্দুল মান্নান বিরোধী দলনেতা ছিলেন, প্রদীপবাবুকে তাঁরা রেখে দেন।
এবার তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতেই শুভেন্দু অধিকারীও ছাড়লেন না প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়কে। বিজেপি পরিষদীয় দলের সচিব হিসেবে তিনি কাজ করবেন বলে খবর। বিধানসভা সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর। তখনই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়কে রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দেন মান্নান। পরিষদীয় ক্ষেত্রে বিরোধী দলের কী কী কাজ করা সম্ভব সে বিষয়ে প্রদীপের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগানোর পরামর্শ মান্নান দেন শুভেন্দুকে।
উল্লেখ্য, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় ছাড়াও প্রদীপবাবু আব্দুস সাত্তার, অতীশ সিনহার সঙ্গে একটি কাজ করেছেন। এখন আপাতত বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যেই আজ বিরোধী দলনেতার সঙ্গে বিধানসভায় গিয়ে একপ্রস্থ আলাপ আলোচনা সেরে এলেন প্রদীপবাবু। এখন দেখার বিরোধী দলনেতা হিসাবে শুভেন্দু অধিকারী জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেন কিনা।