বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > ক্যামাক স্ট্রিটে বিক্ষোভ দেখানো কোনও অপরাধ নয়, জামিনের রায়ে লিখলেন বিচারক

ক্যামাক স্ট্রিটে বিক্ষোভ দেখানো কোনও অপরাধ নয়, জামিনের রায়ে লিখলেন বিচারক

রবীন্দ্র সদনে টেট চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। (PTI)

রায়ে তিনি লিখেছেন, গ্রেফতার ৩০ জনকে হেফাজতে নেওয়ার কারণ দেখতে পাচ্ছি না। পুলিশকর্মীরা আহত হয়েছেন সেটাই বেশি করে প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে। ভুললে চলবে না আমরা কল্যাণকর রাষ্ট্রে বাস করি। আমাদের দাবি জানানোর অধিকার রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটিও লাঠি উদ্ধার হয়নি।

চাকরির দাবিতে আন্দোলনরতদের গ্রেফতার করে আদালতের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়ল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবারই কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ৩০ জনকে জামিন দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত। সেই রায়ের প্রতিলিপি শুক্রবার প্রকাশ্যে এসেছে। তার ছত্রে ছত্রে পুলিশের ভূমিকাকে ধিক্কার জানিয়েছেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক শৌনক মুখোপাধ্যায়।

রায়ে তিনি লিখেছেন, গ্রেফতার ৩০ জনকে হেফাজতে নেওয়ার কারণ দেখতে পাচ্ছি না। পুলিশকর্মীরা আহত হয়েছেন সেটাই বেশি করে প্রমাণ করার চেষ্টা হয়েছে। ভুললে চলবে না আমরা কল্যাণকর রাষ্ট্রে বাস করি। আমাদের দাবি জানানোর অধিকার রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটিও লাঠি উদ্ধার হয়নি। তাও কী করে জামিন অযোগ্য ধারা দিতে পারে পুলিশ? চাকরির দাবিতে জমায়েতকে বেআইনি জমায়েত বলা যায় না। চাকরির জন্য লড়াই করছিলেন আন্দোলনকারীরা। ক্যামাক স্ট্রিটে বিক্ষোভের ঘটনাকেও অপরাধ হিসাবে বিবেচনা করা উচিত হয়নি।

বুধবার বিকেলে প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতার রবীন্দ্র সদন চত্বর। চাকরিপ্রার্থীরা মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পথে বাধা দেয় পুলিশ। এর পর চাকরি প্রার্থীদের ওপর পুলিশের চরম নির্মমতার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, কাউকে ধাক্কা মেরেছেন পুলিশকর্মীরা। কারও বুকে লাথি মেরেছেন। পুলিশের ধাক্কায় এক আন্দোলনকারীর মাথা ফেটেছে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে অরুণিমা পাল নামে এক মহিলা আন্দোলনকারীকে কামড়ে দিতে দেখা যায় এক মহিলা পুলিশ কর্মীকে। যন্ত্রণায় কাতরে ওঠেন অরুণিমা।

এরই মধ্যে আন্দোলনকারীদের একাংশ ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরে আক্রান্ত অরুণিমাসহ ৩০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়। সারা রাত রাখা হয় লালবাজারে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজত দাবি করেন কলকাতা পুলিশ। সওয়ালে সরকারি আইনজীবী বলেন, ধৃতরা পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছেন। এরা কোনও সংগঠনের অংশ তা জানা দরকার। কোনও কথায় কান না দিয়ে ৩০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক।

 

বন্ধ করুন