সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের বিধি মেনে কোনও অবস্থাতেই পুরনো ভাড়ায় বাস ও মিনিবাস চালানো সম্ভব নয়। রবিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিল বাসমালিকদের সংগঠন। শনিবার বাসমালিকদের বর্ধিত ভাড়ার প্রস্তাব মানা হবে না বলে জানিয়ে দেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার পালটা বেসরকারি বাসমালিকরা জানিয়েছেন, ভাড়া না বাড়ালে কোনও অবস্থাতেই বাস রাস্তায় নামানো সম্ভব নয় তাঁদের পক্ষে।
গত বৃহস্পতিবার নবান্নে পরিবহণ দফতরের পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক হয় বাসমালিকদের। সেখানে বাসের ন্যূনতম ভাড়া ২০ টাকা ও মিনিবাসের ন্যূনতম ভাড়া ৩০ টাকা করার প্রস্তাব দেন তাঁরা। বাসমালিকদের দাবি, সরকারের নির্দেশ মেনে ২০ জন যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে গেলে এর থেকে কম ভাড়ায় লাভের মুখ দেখা সম্ভব নয়।
নবান্নের বৈঠক সেরে এসে বাসমালিকদের সংগঠনের নেতারা জানান, তাঁদের প্রস্তাবিত ভাড়া মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে সদিচ্ছা দেখিয়েছে সরকার। ফলে সোমবার থেকে পথে নামবে বাস ও মিনিবাস।
কিন্তু এরই মধ্যে গোল বাঁধে মুখ্যমন্ত্রীর করা একটি মন্তব্য নিয়ে। বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেছিলেন, ‘বাসভাড়া ঠিক করবেন বাসমালিকরা। সেই ভাড়া দিয়ে যে চড়তে পারবে, চড়বে। যে পারবে না, চড়বে না।’
বাসমালিকরা অলিখিত ভাবে বাসভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা করতেই মমতার সেই উক্তি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার শুরু করে বিজেপি। একলাফে তিন গুণ ভাড়া বৃদ্ধিতে চরম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় জনমানসে। প্রশ্ন ওঠে, এমনিতেই মানুষের হাতে যখন টাকা নেই তখন কী করে বাসভাড়ায় এই বিপুল বৃদ্ধিতে সম্মতি দিল ‘জনদরদী’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার?
এর পরই শনিবার ডিগবাজি খায় সরকার। পরিবহণমন্ত্রী জানিয়ে দেন বাসভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণ করেনি সরকার। পুরনো ভাড়াতেই বাস চালাতে হবে বাসমালিকদের। ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব খারিজ হয়েছে শুনেই বাস নামানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মালিকরা। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তা ঘোষণা করলেন তাঁরা। জানিয়েছেন, কলকাতার ৪৪টি বাসরুট ও ৪৮টি মিনিবাস রুটে বাস নামছে না সোমবার থেকে।
পরিবহণমন্ত্রী জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত সরকারি বাস চালিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা।