আরজি কর কাণ্ডে এবার আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের নিশানায় সিবিআই। তদন্ত নিয়ে যে তাঁরা অসন্তুষ্ট, তা আগে থেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন চিকিৎসকরা। এবার সিবিআই-এর দিকে সরাসরি ১০টি প্রশ্নবাণ ছুঁড়ে দিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। তাতে প্রশ্ন করা হয়েছে, 'আরজি করে নির্যাতিতার দেহে পাওয়া তরলের DNA পরীক্ষার রিপোর্ট কী বলছে? আদৌ কি সেই পদার্থের পরীক্ষা করা হয়েছিল?' সঙ্গে ডাক্তারদের প্রশ্ন, 'ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নির্যাতিতার শরীরের ওপরের অংশে অভিযুক্তের লালারস মিলেছে। তাহলে সেই রিপোর্টে সাদা সেই তরল পদার্থের কোনও উল্লেখ নেই কেন?' এরই সঙ্গে চিকিৎসকদের আরও অভিযোগ, '৯ অগস্ট ময়নাতদন্তের সময় নমুনা সংগ্রহ করা হলেও কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবে তা পাঠানো হয় ১৪ অগস্ট। এত সময় লাগল কেন?' (আরও পড়ুন: ২৯-এ মিলল '৩০ তারিখে প্যাকেজড' মাশরুম! জোমাটো CEO বললেন - 'মাত্র ৭২০০ টাকার…')
আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে বড় IPO কবে আনছে জিও? বাজারে আসবে রিলায়েন্স রিটেলের শেয়ারও
সিবিআইকে করা আন্দোলনকারী ডাক্তারদের ১০টি প্রশ্ন
- নির্যাতিতার দেহ থেকে যে তরল পদার্থ পাওয়া গিয়েছিল, সেই পদার্থের ডিএনএ পরীক্ষা হয়েছিল? হয়ে থাকলে রিপোর্ট কী বলছে? চার্জশিটে তার উল্লেখ নেই কেন?
- ৯ অগস্ট নমুনা সংগ্রহ করা হলেও, ৫ দিন দেরিতে ১৪ অগস্ট কেন সেগুলি কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবে সেগুলি পাঠানো হল?
- সঞ্জয় রায় ৯ অগস্ট গ্রেফতার হলেও কেন ১২ অগস্ট ব্যারাক থেকে রক্তমাখা পোশাক বাজেয়াপ্ত করা হয়?
- নির্যাতিতার নখ থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল সেখানে কি ধৃতের টিস্যুর নমুনা ছিল? আর যদি তা থেকে থাকে, চার্জশিটে তার উল্লেখ নেই কেন?
- ৯ অগস্ট রাত পৌনে ১১টায় সিজার লিস্ট তৈরি হয়। সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয় রাত সাড়ে ১১টায়। কিন্তু এফআইআর দায়ের করা হয় রাত পৌনে ১২টায়। এফআইআর-এর আগে কীভাবে গ্রেফতারি? সেই বিষয়ে সন্দেহ থাকলেও তা চার্জশিটে উল্লেখ নেই কেন?
- চার্জশিটে বলা হয়েছে, ৩টে ২০ মিনিটে আরজি করে প্রবেশ করে ৩টে ৩৪-এ ট্রমা কেয়ার ভবনে গিয়েছিল সঞ্জয়। সেখান থেকে ৩টে ৩৬ মিনিটে সে বের হয়। এরপর সময় ৪টে ৩ মিনিটে সে ইমারজেন্সি ভবনের তিন তলায় চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে যায়। ৩টে ৩৬ মিনিট থেকে ৪টে ০৩ মিনিট, এই ২৭ মিনিট কোথায় ছিল সঞ্জয়?
- ঘটনার কথা টালা থানায় জানানো হয়েছিল কি, তা কেন উল্লেখ করা হয়নি চর্জশিটে?
- ব্লুটুথ ইয়ারফোনের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয়েছে সঞ্জয়। ৪টে ৩ মিনিটে সঞ্জয় যখন চেস্ট ওয়ার্ডের দিকে যাচ্ছে তখন তার গলায় ইয়ারফোন ছিল। ৪টে ৩২ মিনিটে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যায় সঞ্জয়। তখন তার গলায় আর সেই ইয়ারফোন ছিল না। তবে এর আগে ৪টে ৩১ মিনিটেও সিসিটিভিতে ধরা পড়েছিল সঞ্জয়। সেই সময় কি তার গলায় ইয়ারফোন ছিল?
- কেন কলেজ কর্তৃপক্ষ এফআইআর দায়ের করেনি?
- চার্জশিটে এটা কেন উল্লেখ করা হল না যে ৯ অগস্ট ১২টা নাগাদ আরজি করে আসার তিন ঘণ্টা পরে গিয়ে মেয়ের দেহ দেখতে পান নিযাতিতার মা-বাবা।
উল্লেখ্য, আরজি কর খুন ও ধর্ষণ মামলায় সোমবার শিয়ালদা আদালতে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, ১১ নভেম্বর থেকে শিয়ালদা আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রটের এজলাসে রোজ শুনানি হবে। আদালত থেকে জেলে ফেরার পথে প্রিজন ভ্যানের জানলা থেকে চিৎকার করে সঞ্জয় বলতে থাকে, 'আমি এতদিন চুপচাপ ছিলাম... আমাকে বিনা কারণে ফাঁসানো হয়েছে... আমি কিন্তু রেপ অ্যান্ড মার্ডার করিনি... সরকারই আমাকে ফাঁসাচ্ছে... ডিপার্টমেন্ট আমাকে ভয় দেখিয়ে এই করেছে। আমি কিন্তু পুরোপুরি নির্দোষ।'