আগামী রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) 'বাংলার মেয়ের জন্মদিন'! আর সেই জন্মদিনের 'অনুষ্ঠানে' আর এক 'বাংলার মেয়ে'কে আমন্ত্রণ জানানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে!
এখানে যাঁর জন্মদিন পালনের কথা বলা হচ্ছে, তিনি হলেন - আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিহত তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়া! যাঁর অপমৃত্যুর পর আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল সারা বাংলা। সেই আন্দোলনের রেশ গড়িয়েছিল দিল্লি পর্যন্ত।
আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি সেই নিহত নিগৃহীতারই জন্মদিন। তাঁর মা আগেই ঘোষণা করেছিলেন, এবার মেয়ের জন্মদিন ফের একবার রাস্তায় নামবেন তিনি। সুবিচারের দাবিতে সরব হবেন। তাঁর সেই প্রয়াসে সহ-নাগরিকদেরও পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন সন্তানহারা হতভাগ্য সেই মা।
কিন্তু, এবার আরজি কর কাণ্ডে নিহত তরুণীর জন্মদিনের দিন সমগ্র আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা যোগ করার উদ্যোগ নিল সংশ্লিষ্ট প্রতিবাদী মঞ্চ। তাদের তরফে স্থির করা হয়েছে, ওই দিন বিকেলে আরজি করে একটি স্মরণসভা করা হবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে - 'বাংলার মেয়ের জন্মদিন'!
এই অভিনব আয়োজনে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিধাননগর কমিশনারেট, লালবাজার, স্বাস্থ্য ভবন, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে আমন্ত্রণপত্র। এমনকী, আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা - সিবিআই-ও। তার জন্য ইতিমধ্য়েই সিজিও কমপ্লেক্সে আমন্ত্রণপত্র দিয়ে এসেছেন প্রতিবাদী মঞ্চের সদস্যরা।
আর এবার সেই একই আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের বাড়িতে। লক্ষ্যণীয় হল, আরজি করের এই নৃশংস ঘটনা ঘটার বহু আগে, ভোট ময়দানে লড়াই জেতার জন্য তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সমর্থনে 'বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়' বলে একটি প্রচার কর্মসূচি চালানো হয়েছিল। আর, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাঁকেই 'বাংলার (আরও এক হতভাগ্য) মেয়ের জন্মদিন'-এর আমন্ত্রণপত্র পাঠানোর তোড়জোড় চলছে!
প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডে ইতিমধ্য়েই মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার আমরণ কারাদণ্ডও হয়েছে। কিন্তু, বিতর্ক থামেনি। থামেনি আন্দোলন। কারণ, মৃতার পরিবার ও আরজি কর আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গের দাবি, সঞ্জয় রায় একা এই নৃশংস হত্যাকণ্ড ঘটাতে পারে না।
তাই 'সমস্ত দোষীদের' চিহ্নিত করে তাদের আইন মাফিক কঠোরতম শাস্তির দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আরজি কাণ্ডে নিহত তরুণীর জন্মদিন উপলক্ষে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন মূল আন্দোলনকে ফের একবার জোরদার করে কিনা, এখন সেটাই দেখার!
যদিও আয়োজকদের একাংশের বক্তব্য, তাঁদের আশা, এই আমন্ত্রণপত্র পাওয়ার পর হয়তো প্রশাসন এবং তদন্তকারী সংস্থা 'ঘটনায় যুক্ত' বাকিদেরও পাকড়াও করতে উদ্যোগী হবে!