কলকাতা শহরে ধর্না কোথায় দেওয়া যাবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে নানা ধরনের দড়ি টানাটানি মাঝেমধ্যেই হয়। তবে এবার গোটা বিষয়টি উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। আর তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শহরের কোথায় কোথায় ধর্না দেওয়া যাবে বা কোথায় দেওয়া যাবে না তা নিয়ে রাজ্য সরকারের একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করা দরকার। এনিয়ে গাইডলাইন প্রকাশ করা উচিত বলেও উল্লেখ করেছে হাইকোর্ট।
এদিকে ধর্নাস্থল নিয়ে দড়ি টানাটানি এটা দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। তবে সেই পরিপ্রেক্ষিতে এবার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গেই নবান্ন বাস স্ট্যান্ডে না করে মন্দিরতলা বাসস্ট্যান্ডে ধর্নামঞ্চ করার জন্য়ও গ্রুপ ডি ঐক্য মঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এদিকে আগামী ১১ থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তাদের ধর্নার কর্মসূচি হবে। নবান্ন বাসস্ট্যান্ডে তারা ধর্নামঞ্চ করতে চেয়েছিল। কিন্তু এনিয়ে রাজ্যের তরফে আপত্তি ছিল। রাজ্যের তরফে বলা হয়েছিল নবান্ন বাসস্ট্যান্ডে কোনওদিন কোনও দল বা সংগঠনকে ধর্না বা বিক্ষোভ সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় না। কেন দেওয়া হয় না সেটাও জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছিল নবান্নের বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রচুর বাস যাতায়াত করে। সেখানে ধর্নামঞ্চ হলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হবে। সেকারণে রাজ্য সরকারের তরফে বিকল্প জায়গা হিসাবে হাওড়া ময়দানের কাছের জায়গার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
তবে হাইকোর্টের তরফে বলা হয়েছে ধর্না থেকে পাঁচজন স্মারকলিপি নিয়ে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে জমা দিতে পারবেন।
এদিকে এই ধর্নাস্থল নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গটা এদিন উঠেছিল আদালতে। সেখানে গ্রুপ ডি ঐক্যমঞ্চের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি বলেন, কলকাতা শহরেও বহু জায়গা রয়েছে যেখানে শাসকদলের সভার অনুমতি দেওয়া হলেও বিরোধীদের অনুমতি দেওয়া হয় না।
সেই প্রসঙ্গেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই ধর্নাস্থল কোথায় কোথায় করা যাবে তা নিয়ে গাইডলাইন প্রকাশের কথা জানান। তিনি বলেন, শহরের কোথায় কোথায় ধর্না দেওয়া যাবে তার একটা বিস্তারিত গাইডলাইন থাকা দরকার।সেই সঙ্গেই গ্রুপ ডি ঐক্য মঞ্চকে আদালত শর্তসাপেক্ষে ধর্না দেওয়ার অনুমতি দেয় ।
এদিকে এদিন এই ধর্নাস্থল নিয়ে গাইডলাইন প্রকাশের যে কথা আদালত বলেছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। এক্ষেত্রে বিরোধী আর শাসকের অবস্থান নিয়ে আলাদা অবস্থান নিতে পারবে না সরকার।