মঙ্গলবার সকালে ইডি কর্তারা পৌঁছে গিয়েছিলেন বালিগঞ্জের পণ্ডিতিয়া রোডের একটি অভিজাত আবাসনে। জানা গিয়েছিল, এই আবাসনে রয়েছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট। তবে প্রায় সাত ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও সেই ফ্ল্যাটে ঢুকতে পারলেন না ইডি তদন্তকারীরা। এর জেরে ফ্ল্যাটটি সিল করে দেওয়া হয় শেষ পর্যন্ত। জানা গিয়েছে, ইডি কর্তারা মনে করছেন ফ্ল্যাটটি অর্পিতার। তবে ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবে নাম রয়েছে অন্য কারও। এই আবহে খাতায় কলমে ফ্ল্যাটের যিনি মালিক, তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন তদন্তকারীরা। আর তাই ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙা হয়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে বেলঘরিয়ার আবাসনে থাকা অর্পিতার ফ্ল্যাটের দরজাও খুলতে পারছিলেন না ইডি কর্তারা। পরে সেই ফ্ল্যাটের তালা ভাঙা হয়। তবে বালিগঞ্জের এই ফ্ল্যাটের তালা ঙেভে তল্লাশি করলে যদি ভেতরে কোনও কিছু না মেলে, তাহলে আইনি জটিলতায় পড়তে হত ইডিকে। সেই কারণেই দরজা না ভেঙে ‘মালিকের’ অপেক্ষা করছিলেন ইডি কর্তারা। তবে সাত ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করেও মালিকের দেখা পানি ইডির তদন্তকারীরা। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত ফ্ল্যাটটি সিল করে দিয়ে যান ইডি কর্তারা।
আরও পড়ুন: পার্থ চাইছেন খাসির মাংস, একাধিক আবদার অর্পিতারও! ED হেফাজতে কী খাচ্ছেন দু’জনে?
মঙ্গলবার দুপুর থেকে ফোর্ট ওয়েসিস নামক আবাসনের ব্লক ৬-এর ৫০৩ নম্বর ফ্ল্যাটের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন ইডির গোয়েন্দারা। ফ্ল্যাটের মালিকের খোঁজ শুরু করেন তাঁরা। আবাসনের কর্মী ও আধিকারিকরা জানান ফ্ল্যাটের মালিক স্বাতী ঝুনঝুনওয়ালা নামে এক মহিলা। কিন্তু তাঁকে কেউ কোনওদিন দেখেনি। ২০১২ সালে ওই ফ্ল্যাটটি কেনা হয়েছিল। তারপর থেকে বিগত ১০ বছরে ফ্ল্যাটের রক্ষাণাবেক্ষণ বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া রয়েছে। ফ্ল্যাটের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রায় পাঁছ লাখ টাকা বকেয়া বলে জানা গিয়েছে। এদিকে আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কাছে সেই ফ্ল্যাটের মালিকের ফোন নম্বর পর্যন্ত নেই। যা নিয়ে সন্দেহ বেড়েছে ইডি কর্তাদের।
ইডি আধিকারিকদের অনুমান, টালিগঞ্জ ও বেলঘরিয়ার মতো এই ফ্ল্যাটেও টাকা থাকতে পারে। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশে অর্পিতাকে ফ্ল্যাটটি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন স্বাতী ঝুনঝুনওয়ালা। এই আবহে স্বাতীর সঙ্গে পার্থবাবুর সম্পর্ক কী, তাও জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। এর আগে অর্পিতার বেলঘরিয়া ও টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা নগদ ও কোটি কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হয়েছে। যদিও অর্পিতা স্পষ্ট ভাষায় দাবি করেছেন, এই টাকা তাঁর নন। এদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও টাকার উৎস সম্পর্কে সদুত্তর দিচ্ছেন না বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বালিগঞ্জের এই ফ্ল্যাট ঘিরে ক্রমেই জল্পনা বাড়ছে।