মাঝেরহাট সেতু খোলা নিয়ে বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল তারাতলা–সহ সংলগ্ন এলাকা। এই পরিস্থিতিতে এখন শুরু হয়েছে কেন্দ্র–রাজ্য চাপানউতোর। বিজেপি’র রাস্তায় নেমে বিক্ষোভের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, রেলের গড়িমসিতে এখনও সেতু চালু করা যায়নি। যদিও তা মানতে নারাজ পূর্ব রেল। রাজ্যের সামান্য কিছু অনুমতির জন্যই মাঝেরহাট সেতুর সমস্ত কাজ থমকে রয়েছে বলেই তাদের দাবি।
মাঝেরহাট সেতু খোলার দাবিতে হঠাৎ বিজেপি’র বিক্ষোভ ঘিরে তুলকালাম তারাতলা। পথ অবরোধ, পুলিশের লাঠি, গ্রেফতার ঘিরে দীর্ঘক্ষণ এলাকা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু রাজ্য সরকার নয়, কেন্দ্রের গড়িমসিতেই যে ভেঙে পড়া সেতুটির পুনর্নির্মাণে ও খুলে দিতে সময় লাগছে তা নবান্নে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তখনই নিজেদের গা থেকে সমস্ত দায় ঝেড়ে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে রেল এবং কেন্দ্রীয় সরকার।
নয়া সেতু নির্মাণে অনুমতি না দেওয়ায় মাঝেরহাট সেতু সম্পূর্ণ করতে বিলম্ব হয়েছে বলে সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। আর অবিলম্বে সেতু খোলার দাবিতে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নেতৃত্বে দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। গ্রেপ্তার হওয়া কর্মীদের না ছাড়লে তিনিও পুলিশের বাসে উঠে বসে থাকবেন বলে হুমকি দেন কৈলাস। বিষয়টির ইঙ্গিত করে নাম না নিয়ে বিজেপি নেতাদের পালটা কটাক্ষও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুটি দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ধাঁচে ৬৫০ মিটার দীর্ঘ নয়া সেতু তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। পরীক্ষা শেষে এখন রেলের সেফটি সার্টিফিকেটর জন্য অপেক্ষা চলছে। পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের দিক থেকে অনুমতি না মেলায় মাঝেরহাটের কাজ থমকে আছে বলেই দাবি করা হয়েছে। পূর্ব রেলের এই দাবিকে হাতিয়ার করে আসরে নেমেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু রেল বা কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে কেন কোনও চিঠি রাজ্য সরকারকে দেয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।