দুপুরে কালো মেঘে ঢেকে গেল আকাশ। তখনই আশঙ্কা করা হচ্ছিল বৃষ্টি আসবে। তবে সেটা ভারী বৃষ্টি এমনটা কেউ ভাবতে পারেননি। তাই মুহূর্তের ওই বৃষ্টিতে জল থইথই করতে শুরু করল মেট্রো স্টেশন থেকে তিলোত্তমার নানা রাস্তায়। জলমগ্ন হয়ে পড়ে পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশন। তার ফলে চূড়ান্ত ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, কলকাতার রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়ার ফলে মেট্রো স্টেশনেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে শক্তিশালী নিম্নচাপ। আর তারই প্রভাবে আগামী শনিবার দক্ষিণবঙ্গজুড়ে ঝড়বৃষ্টির মাত্রা বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দফতর। উপকূল সংলগ্ন তিন জেলা—দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে ঝড়বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে বলেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু শনিবারের পূর্বাভাসের আগে বুধবারই ভেসে গেল কলকাতা। যদিও সেই জল বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়নি। কিন্তু জলমগ্ন মেট্রো স্টেশন থেকে মেট্রোয় চড়তে গিয়ে নাকাল হলেন নিত্যযাত্রীরা। বৃষ্টির জলে ভিজে গেল মেট্রোর ভিতরের অংশ বলে খবর। মেট্রো স্টেশনে জল জমার ঘটনা দেখে অনেকেই অবাক। কারণ আগে কখনও এমন হয়নি বলেই মনে করছেন নিত্যযাত্রীরা। আজ, বুধবার দুপুরের বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে যায় ট্রামলাইনও। তাতে বিপুল পরিমাণ পথচলতি মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। অনেকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেরে ছাত্রের কোমর ভেঙে দিলেন প্রধানশিক্ষক, গ্রেফতারের দাবিতে পথ অবরোধ ভগবানগোলায়
দু’দিন আগে ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার নানা জায়গায়। আর আজ বুধবার ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি হল শহরে। তাতে কোথাও উলটে যায় মোটরবাইক। তার জেরে চোট পেয়েছেন মোটরবাইক চালক এবং আরোহী। হাওড়া স্টেশনে আজও দেখা গেল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে সাবওয়ে। তাতে সেখান দিয়ে ট্রেন ধরতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেলেন নিত্যযাত্রীরা। এই ঝড়বৃষ্টি এবং তার জেরে জল জমে যাওয়ায় মোট ১২টি টিকিট কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটতে সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। স্টেশনে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
সোমবার থেকে রাজ্যের সব জেলাতেই ঝড়বৃষ্টির মাত্রা আগের থেকে বেড়েছে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর থাকা ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপ অক্ষরেখার প্রভাব ছিলই। তার সঙ্গে বঙ্গোপসাগর থেকে বেশি মাত্রায় জলীয় বাষ্প ঢোকার জন্য এখন বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। দক্ষিণ–পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে আজ, বুধবার একটি নিম্নচাপ তৈরি হয়। এটি শক্তি বাড়িয়ে আপাতত উত্তর–পূর্ব অভিমুখে এগোবে বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। আজ, বুধবার দুপুরে কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ–সহ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি হয়। শুক্রবার থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। শনিবার থেকে ভারী বৃষ্টি হবে।