সদ্য জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। কিন্তু তাঁদের শপথ নেওয়ার কাজ করে হবে? রাজ্য–রাজনীতিতে এই প্রশ্ন এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। বরং রাজভবন থেকে একটা ভাববাচ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। এবার রাজভবনের কোনও হেলদোল না থাকায় নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে পাল্টা চিঠি দিল বিধানসভা কর্তৃপক্ষ। বরানগরের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার রেয়াত হোসেন সরকার দুই বিধায়কের শপথগ্রহণ নিয়ে চলছে টালবাহানা। তা এবার গেল পাল্টা চিঠি।
এই দুই বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন প্রায় ১৬ দিন হয়েছে। সময় কেটে গেলেও রাজভবন চলছে ঢিমেতালে। বিধানসভার অনেকে বলছেন, রাজ্যপালের হাতে ক্ষমতা আছে বলে এখন খেলাচ্ছেন। তবে কাজ তো করতে হবে সংবিধান আর আইন মেনে। শপথ না হওয়ায় ওই দুই এলাকায় নাগরিক পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতার। তাই শপথগ্রহণ করার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছে বিধানসভা। তাই জবাবি চিঠিতে বিধানসভা থেকে লেখা হয়েছে, ‘রাজ্যপাল আপনি সাংবিধানিক প্রধান। শপথের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুন।’
আরও পড়ুন: আমলাদের ‘অ্যানুয়াল কনফিডেনশিয়াল রিপোর্ট’ দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী, কড়া হচ্ছেন প্রশাসক
এখন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গেও দ্বৈরথ অব্যাহত রয়েছে। নানা ইস্যুতে সংঘাত লেগেই রয়েছে। তার উপর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ফল ভাল হয়েছে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস একে অপরকে আক্রমণ করেছেন। তারপরই রাজ্যপালের ‘ধীরে চলো’ নীতি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তাই বিধানসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে রাজভবনে চিঠি পাঠানো হয়। বেশ কদিন পর তার জবাব আসে রাজভবন থেকে। যদিও ওই চিঠিতে শপথ কবে, কীভাবে হবে, সেসব নিয়ে কোনও কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এবার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে নিয়ে রাজববনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগে রাজভবন যে চিঠি পাঠায় তাতে বিধানসভার থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে প্রবীণ বা সবথেকে পুরনো মহিলা বিধায়ক কে আছেন? তফসিলি জাতি (এসসি) ও তফসিলি জনজাতির (এস টি) প্রবীণ বিধায়ক কে আছেন? এমনকী নবীন বিধায়কদের তালিকাও চেয়েছে রাজভবন। এই চিঠির সঙ্গে শপথের কোনও সম্পর্ক নেই বলে মনে করছে বিধানসভা। আর এই বিষয়টি একবারেই ইতিবাচক নয় বলে মত বিধানসভা কর্তৃপক্ষের। তাই পাল্টা চিঠি গিয়েছে। এখন দেখার শেষ কোথায় হয়।