বাংলায় পড়ে আছে শত্রু সম্পত্তি বা এনিমি প্রপার্টি। সেগুলি ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী এনিমি প্রপার্টির জায়গায় বেআইনি নির্মাণ পর্যন্ত হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বুধবার রাজাবাজারে হওয়া বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলতে কলকাতা পুরসভাকে সঙ্গে নিয়ে যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট। এরপরই কলকাতায় শুরু হয়েছে এনিমি প্রপার্টির সমীক্ষা। এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্ট এই সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। যে বাড়িটি ভাঙা হয়েছে তার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং কলকাতা পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে ওই বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
এই বেআইনি বাড়ি ভাঙার পাশাপাশি কলকাতার ১৭০ নম্বর কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট অর্থাৎ রাজাবাজারের কাছে এনিমি প্রপার্টির সমীক্ষা চালানো হয়। সূত্রের খবর, প্রায় ৪৪ কাঠা জমি রয়েছে এখানে। যেখানে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছে প্রায় ৭০০০ বাসিন্দা। এমনকী সেখানে রয়েছে ২৫টি দোকান। এগুলি কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। এগুলিই হচ্ছে এনিমি প্রপার্টি বা শত্রু সম্পত্তি। যা সরকারের হাতে থাকে। সেখানে কিছু মানুষ গায়ের জোরে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকী এনিমি প্রপপার্টিতে বেআইনি নির্মাণ পর্যন্ত করছিলেন নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালে এলেন নতুন সিপি মনোজ ভার্মা, খতিয়ে দেখলেন নিরাপত্তা
এখন প্রশ্ন, এই এনিমি প্রপার্টি কী? ১৯৬২ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যে চিন–ভারত বা ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের সময় এবং পরে এই দেশের কিছু নাগরিক সম্পত্তি ফেলে রেখে পাকিস্তান বা বাংলাদেশে চলে যান। তাঁরা কেউ এই সম্পত্তির দাবি না জানানোয় সেসব সম্পত্তি এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অধীনে থেকে যায়। সম্প্রতি দেড় বছর ধরে কলকাতায় এমন সম্পত্তির সমীক্ষার কাজ চলছে। যে ৯০টি এনিমি প্রপার্টি রয়েছে তার মধ্যে ৫০টির থেকে কর আদায় করা হচ্ছে। এখানে বসবাসকারী বাসিন্দারা সেই কর দিয়ে থাকেন।
আর সেই কর নিয়মমাফিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তহবিলে জমা হয়। তবে অনেক এনিমি প্রপার্টি আছে যেখান থেকে দীর্ঘদিন কোনও কর জমা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। তাই তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই সমীক্ষার কাজ শুরু করতে এসেছিলেন এনিমি প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অফিসাররা। তখন তাদের উপরে এলাকার মানুষজন চড়াও হয়ে হামলা করেছিলেন বলে অভিযোগ। তার জেরে এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আসেন প্রপার্টি ডিপার্টমেন্টের অফিসাররা। আর বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়। কতজন এই এনিমি প্রপার্টিতে বসবাস করছেন এবং কতজন কর দিচ্ছেন, সেই তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে এনিমি প্রপার্টি ইনচার্জ বাপ্পাদিত্য দত্ত বলেন, ‘ভাড়াটেরা নামমাত্র ভাড়া দেন। অনেকে বন্ধ করে দিয়েছেন ভাড়া দেওয়া। বেআইনি নির্মাণ করছেন। তাই পদক্ষেপ করা হয়েছে।’