লক্ষ্মীরতন শুক্লা মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। সেই ধাক্কার মধ্যেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে কার্যত যেন আর আশার আলো দেখতে পাচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ আজ তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে যাচ্ছেন না রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ দলে থেকে পরিষ্কার ভাবমূর্তি রেখেও যদি সম্মান পাওয়া না যায়, তাহলে সেই দলে থেকে লাভ নেই বলে মনে করছেন তিনি। সেকথা ঠারেঠোরে আগেই বুঝিয়ে দেন তিনি। তাতে কাজ না হওয়ায় এবার সরাসরি বোঝালেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে জানিয়েছেন, তাঁর শরীর ভালো নেই। তাই আজকের বৈঠকে যাচ্ছেন না। শুক্রবার ক্যাবিনেট বৈঠকও ছিল। সেই বৈঠকেও মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় যোগ দেননি বলেই শোনা যাচ্ছে। আগের ক্যাবিনেট বৈঠকেও অনুপস্থিত ছিলেন তিনি। যদিও তখন দলবদলের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছিলন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত কয়েকদিন ধরেই দলের কর্মসূচিতে গরহাজির থাকছেন রাজীব। মঙ্গলবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে যোগ না দেওয়া, আরও একবার উসকে দিল তাঁর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা। চলতি মাসেই ফের রাজ্যে আসার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। তখন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে গুঞ্জন।
উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই হাওড়ার বালিতে একটি রক্তদান শিবিরে গিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘কর্মীরাই দলের সম্পদ। কিছু নেতা আছে, যাঁরা কর্মীদের নাম ভাঙিয়ে খান। যাঁরা কর্মীদের চাকর–বাকর মনে করেন। ভাবাবেগ নিয়ে খেলেন, কর্মীরাই তাঁদের জবাব দেবেন। কর্মীরাই ওইসব নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করবেন।।’ তাঁর এই মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে বেশি সময় নেয়নি।
তাঁর আরও একটি বিস্ফোরক মন্তব্য হল, ‘আমি স্তাবকতায় বিশ্বাসী নই। ন্যাচরালি তাই নম্বর কম। দুর্নীতিগ্রস্তরা সামনের সারিতে।’ তিনি দলে সম্মান পাচ্ছেন না বলে যে অভিযোগ উঠেছিল এবার তারই বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল বৈঠক এড়িয়ে। এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কী রাজীবের মানভঞ্জনে ব্যর্থ দল? নাকি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একরোখা মনোভাবে দূরত্ব বাড়ছে? রাজীব ব্যানার্জি কী বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? এসবের উত্তর সময় দেবে। তবে রাজীব এবং লক্ষ্মীরতন দল ছেড়ে দিলে হাওড়া গ্রামীণ এবং শহরে তৃণমূলের সংগঠন ভেঙে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।