আজও জোট শরিক। মেজ শরিক বলা হয়। আর তাদের দলের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ কলকাতার সমাবেশ করল তারা। আর এখান থেকেই কংগ্রেসকে নাম করে এবং বড় শরিক সিপিএমকে নাম না করে তুমুল তোপ দাগলেন সিপিআই নেতারা। সিপিএমের এখনও কংগ্রেস সখ্য রয়েছে। তবে সেই প্রীতি সিপিআই দেখায়নি। বরং জোর সমালোচনা শোনা গেল সিপিআই নেতাদের গলায়। এখন সিপিএমের সেই দাপট নেই। তাই তাদেরকে সমীহ করার ব্যাপার যে নেই সেটা এবার কলকাতার রাজপথ থেকে স্পষ্ট করে দিল সিপিআই। ইন্ডিয়া জোট নিয়ে কংগ্রেসকে কড়া আক্রমণ করা হয়েছে। যা কিনা বড় শরিকের লাইনের বিপরীত। সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা থেকে শুরু করে রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্য়োপাধ্যায় সব নেতারাই ইন্ডিয়া জোট ভেস্তে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের মানসিকতাকেই দায়ী করলেন। সেক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগে সিলমোহর পড়ল।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যে ভাবনা এবং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছিল সেটা বাস্তবতা আজ নেই। আর সেটা দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকালেই বোঝা যাচ্ছে। সেখানে ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে। যেখানে বলা হয়েছিল, যে যেখানে শক্তিশালী সে সেখানে লড়বে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেটা কংগ্রেসই ভেঙেছে। তাই ডি রাজা বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটের দায়িত্ব কংগ্রেস পালন করেনি।’ আর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শাণিয়ে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘কংগ্রেসের দয়ার জন্য নতজানু হয়ে বসে থাকলে চলবে না। কংগ্রেস রাজার দল। কংগ্রেসের কারণে ইন্ডিয়া জোট ভেঙে যাচ্ছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।’ আর কেন্দ্রীয় সম্পাদক পল্লব সেনগুপ্ত বললেন, ‘কংগ্রেস নেতাদের অহংবোধের জন্য হারাতে পারলাম না মোদী সরকারকে।’
আরও পড়ুন: ‘রাজ্যে তৈরি হচ্ছে ৬টি ইকোনমিক ফ্রেইট করিডর’, বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী
আজ সিপিআই যা বলছে সেটা বেশ কিছুদিন ধরে সেটা তৃণমূল কংগ্রেস বলে আসছিল। সেখানে আজ সিপিএমকেও নাম না করে তুলোধনা করা হয়েছে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ‘এখনও কীসের বিভেদ? যে কারণে পার্টি ভাগ হয়েছিল সেই কারণ কি আজও আছে? ৬০–এর দশকের পশ্চিমবঙ্গের সেই বামপন্থী আন্দোলনকে ফিরিয়ে আনতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষ ছাড়া কমিউনিস্টদের কোনও শক্তি নেই। মানুষ থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন।’ আর পল্লব সেনগুপ্তর কথায়, ‘৯০–এর দশক থেকে আমাদের বৈভব বাড়তে শুরু করল। তারপরই একের পর এক ভুল। যার জন্য বাম সহযোগী মানুষজন আজ পশ্চিমবঙ্গে আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছে।’
কংগ্রেসের সমালোচনা রাজপথ থেকে করলেও ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম কংগ্রেস জোট থেকে কি বেরিয়ে আসবে সিপিআই? এই প্রশ্ন আজ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। কংগ্রেসে প্রতি যখন এতই অনীহা তখন জোট ছেড়ে বেরিয়ে এল না কেন সিপিআই? এই প্রশ্নও উঠছে। বামফ্রন্টের বৈঠকেও সিপিআইকে এই ইস্যুতে ঝড় তুলতে দেখা যায়নি। সেখানে আজ রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে সিপিআইয়ের সমাবেশে পার্টিকে শক্তিশালী করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। আজ এই সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় বাজেটের কপি পোড়ানো হয়।