একের পর এক নেতা জামিন পেয়েছেন। তিহাড় থেকে ছাড়া পেয়ে নিজের বাড়িতে ফিরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। মানিক ভট্টাচার্য, শান্তনু–কুন্তল, জীবনকৃষ্ণ সাহা, অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এখন খোলা আকাশের নীচে। রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া বাকিবুর রহমানেরও জামিন হয়ে গিয়েছে। তবে অনেক চেষ্টা করেও জেলের বাইরে আসতে পারেননি প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। উলটে আজ, শনিবার ছিল জামিন বিষয়ক মামলার শুনানি। সেখানে আদালতে ইডি অফিসাররা জামিনের বিরোধিতা করে জ্যোতিপ্রিয়কে দুর্নীতির গঙ্গাসাগর বলে উল্লেখ করলেন।
নদীর শাখা প্রশাখা যেভাবে সাগরে মেশে, সেভাবেই দুর্নীতিগ্রস্তদের গন্তব্যস্থলও ছিলেন তিনি। রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে অভিযুক্ত জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে এমন দাবিই করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দু্র্নীতির ‘রিং মাস্টার’ বলেও দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। সমুদ্রের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়র তুলনা করে ইডি অফিসাররা বললেন, ‘গঙ্গা যেমন সমস্ত কিছুকে সাগরে নিয়ে গিয়ে ফেলে, ঠিক তেমনভাবেই রেশন দুর্নীতির সমস্ত লিঙ্ক গিয়ে জুড়েছে জ্যোতিপ্রিয়র সঙ্গে।’
আরও পড়ুন: এবার দার্জিলিংয়ের তুষারপাতে নামল পর্যটকের ঢল, বছরের শেষে প্রবল ঠাণ্ডা শৈলশহরে
তবে এই রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককেই মাথা বলে উল্লেখ করেছে ইডি। আজ আদালতে ইডির আইনজীবীর বক্তব্য, জ্যোতিপ্রিয়ই এই দুর্নীতির রিং মাস্টার। রেশন দুর্নীতির পরিচালনা করেছেন তিনিই। তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে যে সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ভুয়ো সংস্থায় দুর্নীতির টাকা পৌঁছেছে সেসব কিছু গিয়েই সেই জ্যোতিপ্রিয়র দিকে মিশেছে। আদালতে জ্যোতিপ্রিয়কে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে চিহ্নিত করে ইডির দাবি, পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে দুর্নীতির সব টাকা নিজের পকেটে পুরেছেন জ্যোতিপ্রিয়।
আদালতে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বারবার রেশন দুর্নীতির জামিনের আবেদন করেছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী। কিন্তু প্রত্যেকবারই বালুর আবেদনে আপত্তি জানিয়ে আদালতে রিপোর্ট পেশ করে ইডি। এবারও তার অন্যথা হয়নি। এবার ইডির আইনজীবী আদালতে সওয়াল করে বলেন, ‘জ্যোতিপ্রিয় হলেন দুর্নীতির গঙ্গাসাগর। এই দুর্নীতিকে যদি পাখির মতো উপর থেকে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে, গঙ্গাসাগরে যেমন নদীর বিভিন্ন শাখা প্রশাখা এসে মেশে, তেমনই দুর্নীতির একাধিক শাখা গিয়ে মিশেছে মন্ত্রীর কাছে। তদন্ত করতে গিয়ে এই সব দেখা গিয়েছে। এই দুর্নীতি চালনা করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয়ই। জামিন পেলে পুরো মামলাটিকে প্রভাবিত করতে পারেন।’