দীর্ঘ রোগভোগের পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজের পাম অ্যাভেনিউয়ের বাড়িতে প্রয়াত হয়েছেন রাজ্যে বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যু সংবাদ পেয়েই তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে একে একে ছুটে যান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম থেকে শুরু করে বাম নেতা বিমান বসু এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতার। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে রাজনৈতিক মহলে। এমন অবস্থায় সতীর্থকে হারিয়ে ভারাক্রান্ত বিমান বসু।
আরও পড়ুন: ‘ভুল পদ্ধতির এক ট্র্যাজিক নায়ক’, বুদ্ধবাবুর জীবনাবসানে ফেসবুক পোস্ট কুণালের
বুদ্ধদেবের থেকে বিমান বসু বয়সে কয়েক বছরের বড় হলেও একসময় তাঁরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছেন। একে অপরের সমর্থক ছিলেন তাঁরা। প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সেই সময় পাঁচজন তরুণ বামপন্থী ছাত্র-যুব নেতাকে প্রায় হাতে ধরে তৈরি করেছিলেন কিংবদন্তি সিপিএম নেতা প্রমোদ দাশগুপ্ত। তাঁরা হলেন - বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, অনিল বিশ্বাস, সুভাষ চক্রবর্তী এবং শ্যামল চক্রবর্তী। এর মধ্যে শেষের তিন বাম নেতা আগেই প্রয়াত হয়েছেন। আর এবার চলে গেলেন বুদ্ধদেব। এই অবস্থায় সতীর্থকে হারিয়ে কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না বিমান বসু। শোকস্তদ্ধ বিমান বসু বলেন, ‘ এই খবর শোনার পরেই আমি উঠে দাঁড়াতে পারছিলাম না। কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমি সাড়ে ৯ টায় খবর পেয়েছি। খবর পেয়ে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। তারপর এখানে আসি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বুদ্ধদেব দীর্ঘদিন মানুষের স্বার্থে, পার্টির স্বার্থে কাজ করেছেন। এখনও অনেক ক্ষতি হল।’ এরপরেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘বন্ধু চলে গেলে ক্ষতি তো হবেই।’
দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার কারণে বুদ্ধদেবকে দেখতে প্রায়ই পাম অ্যাভেনিউয়ের বাড়িতে যেতেন বিমান বসু। তিনি ফোনে কথা বলার চেয়ে বন্ধুকে বাড়িতে গিয়ে দেখতেই বেশি পছন্দ করতেন। বৃহস্পতিবার সকালে বন্ধুর মৃত্যু সংবাদ শোনার কিছুক্ষণ পর বুদ্ধদেবের বাড়িতে যান বিমান বসু। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একজন নিষ্পাপ, সৎ নেতা হিসেবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অমর হয়ে থাকবেন।’