আধার নিষ্ক্রিয়তার আতঙ্কে ঘুম উড়েছে বাংলার বহু মানুষ। বিষয়টিকে 'যান্ত্রিক ত্রুটি' আখ্যা দিয়ে অবশ্য অভয় প্রদানের চেষ্টা করেন বিজেপি নেতারা। আর এরই মধ্যে জানা গেল, মঙ্গলবার থেকে অনেকের নিষ্ক্রিয় থাকা আধার কার্ড ফের কাজ করতে শুরু করেছে। তবে এর মধ্যেও অনেকে অভিযোগ করলেন, আধার সক্রিয় হলেও যাচাই করতে গিয়ে প্রথমে সমস্যায় পড়তে হয়েছে অনেককে। তবে শেষ পর্যন্ত আধার সক্রিয় হওয়ায় অনেকেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন। যদিও এখনও বিতর্ক শেষ হচ্ছে না। (আরও পড়ুন: 'খলিস্তানি' তকমা পাওয়া নিয়ে মুখ খুললেন IPS নিজে, কুণালের খোঁচা, 'মোদীও কি তবে…')
উল্লেখ্য, এর আগে আধার আইনের ২৮এ ধরার কথা উল্লেখ করে চিঠি পাঠিয়ে বাংলার শতাধিক মানুষের আধার নিষ্ক্রিয় করেছিল ইউআইডিএআই। রাঁচির আঞ্চলিক অফিস থেকে সেই সব চিঠি এসেছিল। কবে কীসের ভিত্তিতে এই ব্যক্তিদের ‘বিদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করে রাঁচির অফিস এই পদক্ষেপ করেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিজেপি নেতারা 'যান্ত্রিক ত্রুটি'র কথা বলছেন বটে, কিন্তু এই গোটা ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলার এনআরসি বিরোধী যুক্তমঞ্চ ‘জয়েন্ট ফোরাম আগেন্স্ট এনআরসি’। জানা গিয়েছে, আধার কর্তপক্ষকে তারা আইনি নোটিশ পাঠাতে চলেছে। অভিযোগ, আধার আইনের যে ২৮এ ধারার কথা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, তা গত বছর সেপ্টেম্বরে চুপিসারে কার্যকর করা হয়েছিল। যদিও এর আগে আরটিআই-এর জবাবে আধার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তাদের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করার ক্ষমতা নেই। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, আধার কর্তৃপক্ষ কী ভাবে কাউকে বিদেশি নাগরিক বলে সন্দেহ করে আধার নিষ্ক্রিয় করার নোটিস পাঠাল?
উল্লেখ্য, আধার নিষ্ক্রিয় হওয়ার ঘটনায় বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলার সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। জেলায় জেলায় বহু মানুষের কাছে ইউআইডিএআই-এর তরফ থেকে চিঠি যাচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, আধার আইনের ২৮এ ধারার অধীনে আধার নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। এই বিতর্কের আবহে ময়দানে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে 'ভোট কাটতে' বিজেপি ইচ্ছে করে আধার নিষ্ক্রিয় করছে বহু মানুষের। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আলাদা পদক্ষেপ করেছে। এই সবের মাঝেই 'সিএএ'-কে হাতিয়ার করা বিজেপি শঙ্কিত হয়। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, শান্তনু ঠাকুররা ময়দানে নামেন। শুভেন্দু দাবি করেন, চক্রান্ত হচ্ছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে নাকি নিষ্ক্রিয় হয়েছে কিছু আধার। অপরদিকে শান্তনু ঠাকুর গোটা ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে নেন। সঙ্গে নিজের ফোন ও ইমেল আইডি দিয়ে আধার নিষ্ক্রিয় হওয়া ব্যক্তিদের যোগাযোগ করতে বলেন। আর গত সোমবার সুকান্ত বলেছিলেন, মঙ্গল সকালের মধ্যে সবার আধার আবার সক্রিয় হবে। তবে মঙ্গলে বাংলার আরও বহু মানুষ আধার নিষ্ক্রিয়তার চিঠি পান। আর মঙ্গলেই বাংলার সরকারের তরফে চালু করা হয়েছে আধার নিষ্ক্রিয়ার অভিযোগ জানানোর পোর্টাল। তবে এর মধ্যেই অনেকের নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়া আধার ফের সক্রিয় হয়েছে বলে দাবি করা হয়।