ভারত সরকারের তরফে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার পর তার কৃতিত্ব নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল – বিজেপির দড়িটানাটানি। এরই মধ্যে দাড়িভিটে নিহত ২ ছাত্রকে ‘ভাষা শহিদ’এর মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। শুক্রবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে এই দাবি জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন - এবার গ্রেফতার আরজি করের টিএমসিপি নেতা আশিস পাণ্ডে, সিবিআই জালে সন্দীপের ডান-হাত
পড়তে থাকুন - মুর্শিদাবাদ সীমান্তে ২ ভারতীয়কে অপহরণ করল বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষীরা
বৃহস্পতিবারই বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে এই নিয়ে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। বিজেপির দাবি, কেন্দ্রে রয়েছে তাদের সরকার, তাই বাংলা ভাষার এই স্বীকৃতিলাভের কৃতিত্ব তাদের। পালটা তৃণমূলের দাবি, রাজ্যের উদ্যোগে গবেষকরা বাংলা ভাষার ওপর গবেষণা করে ২টি গবেষণাপত্র কেন্দ্রকে পাঠিয়েছিলেন। যাতে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এই কৃতিত্ব রাজ্যের।
এরই মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে শুক্রবার সুকান্তবাবু জানালেন, ‘আপনার নিশ্চয়ই স্মরণে রয়েছে যে, ২০১৮ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার দাড়িভিট উচ্চ বিদ্যালয়ে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের পরিণতিতে ২ ছাত্রের মৃত্যু হয়। ওই স্কুলে প্রয়োজন ছাড়াই উর্দু শিক্ষকের নিয়োগকে কেন্দ্র করে একটি ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কারণ ওই এলাকায় উর্দুভাষী মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম। জোর করে উর্দু শিক্ষক চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সরব হওয়া পড়ুয়াদের উপর লাঠি, গুলি চালায় পুলিশ। দুই ছাত্র তাপস বর্মন ও রাজেশ সরকারে মৃত্যু হয়।’
সুকান্তবাবু লিখেছেন, ‘আমি মনে করি প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণেই ওই ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে মনে করি, উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে গলা তুলে বাংলার যে দুই পড়ুয়া প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের স্মরণে রাখাও আমাদের কর্তব্য। বাংলা ভাষার ‘ধ্রুপদী’ স্বীকৃতি মেলার পরে রাজ্য সরকার ওই দুই ছাত্রকে ‘ভাষা শহিদ’ হিসাবে ঘোষণা করুক। দাড়িভিটে তৈরি হোক দুই শহিদের স্মারক।’
আরও পড়ুন - পাচারের সময় নদিয়া সীমান্তে উদ্ধার আজব প্রাণী, জানেন এর নাম কী?
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, দাড়িভিটে নিহতের ভাষা শহিদ ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যে উর্দু চাপানোর চেষ্টা করেছিল তা মনে করালেন সুকান্তবাবু।