আজ, বৃহস্পতিবার ইডির বিশেষ আদালতে শুরু হয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জ গঠন প্রক্রিয়া। সেখানেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের পক্ষ থেকে বড় দাবি করা হল ভরা এজলাসে। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডির দাবি, অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। প্রায় ৫১ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল। সেই টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরই। জেরায় ইডি অফিসারদের কাছে সেই কথা অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ই জানিয়েছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মূল মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দাবি করেছে ইডি।
এদিকে ইডির পক্ষ থেকে বিশেষ আদালতকে জানানো হয়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ ৫১ কোটি টাকা এবং প্রচুর সোনা, বিদেশি মুদ্রা যা পাওয়া গিয়েছে তার মালিক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই। আর সে কথা জেরায় তদন্তকারীদের কাছে স্বীকার করেছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায় বলে জানান ইডির আইনজীবী। ইডির আইনজীবী দাবি করেন, শিক্ষামন্ত্রী পদে থাকার সময় নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন পার্থ। তিনিই মাস্টারমাইন্ড। তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে দ্বিতীয় অভিযুক্ত অর্পিতা। তাঁকে বারবার জেরা করতে অর্পিতা দাবি করেন, তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়ার টাকার পুরোটাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ভুয়ো সংস্থা খুলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘অভিষেক দার লোক বলছি, ৫ লাখ রেডি রাখুন’, চমকে কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান, গ্রেফতার ৩
অন্যদিকে অর্পিতার নামে পার্থ অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা রাখতেন পার্থই। পার্থ চট্টোপাধ্যায়–সহ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ৫৪ জনের নাম রয়েছে। অনেকে এখন জামিনে মুক্ত। আদালতের নির্দেশে অবশ্য আজ সকলেই আদালতে উপস্থিত হন। তারপরই চার্জগঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। শুরুতে অভিযুক্তদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ রয়েছে সেটা ইডির আইনজীবীকে পড়ে শোনাতে বলেন বিচারক। সেখানেই ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযুক্তদের তালিকায় প্রথম নামটি রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। দু’নম্বরে রয়েছে পার্থবাবুর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। যা শুনে চাপে পড়ে যান পার্থ।
এছাড়া ২০২২ সালের ২২ জুলাই তারিখে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাকতলার বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। ওই একইদিনে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও দীর্ঘক্ষণ জেরা করেন তদন্তকারীরা। নিজের দুটি ফ্ল্যাটে অর্পিতা পার্থর বিপুল পরিমাণ টাকা রেখেছিলেন। টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার দুটি অভিজাত আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে ওই টাকা উদ্ধার হয়। আর চার্জ গঠন প্রক্রিয়া শেষ হলে শুরু হবে বিচার প্রক্রিয়া বলে আদালত সূত্রে খবর।