প্রেসিডেন্সি জেলে দুর্গাপ্রতিমার পায়ে মাথা ঠেকিয়ে কেঁদেও লাভ হল না। জামিন তো মিলছেই না। উলটে আষ্টেপিষ্টে তাঁকে বাঁধছে সিবিআই। হ্যাঁ, তিনি নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হন তিনি। আগে একাধিকবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে শুরু থেকেই সিবিআই আদালতে দাবি করে আসছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ই নিয়োগ দুর্নীতির অন্যতম প্রধান মাথা। এবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সুপারিশেই প্রাথমিকে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের চাকরি হয়েছিল। সিবিআই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিকাশ ভবন থেকে পাওয়া নথি থেকেই এই সংক্রান্ত তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা।
এদিকে জেল হেফাজতে থাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গত ১ অক্টোবর বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করার আবেদন জানায় সিবিআই। সিবিআই আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, টেট দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এই বিষয়ে একাধিক নথিও আদালতে পেশ করেন তাঁরা। ২০২২ সালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে ইডি। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে তারপর গ্রেফতার করে সিবিআই। টানা তল্লাশির মুখোমুখি হতে হয় বিকাশ ভবনের অফিসারদের। প্রচুর নথি মেলে। সেখানেই মেলে প্রার্থীদের তালিকা। অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা এক আমলাকে পাঠায় পার্থ। সেই তালিকা থেকে কয়েকজন চাকরিও পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজেপি সাংসদের হাতে আক্রান্ত স্বামীজি, টেলিফোনে কথা বলে আশ্বস্ত করলেন মমতা
অন্যদিকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। সিবিআই জেরায় তিনি যে তথ্য দিয়েছিলেন তা একেবারে মেলেনি। তদন্তে নেমে বোঝা যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় তদন্তের গতি অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। তখন জেরার চাপ বাড়ে। কিন্তু তিনি বারবার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। এমন নানা কথা বলেছেন পার্থ যা বাস্তবে আষাঢ়ে গল্প বলে সিবিআই জানতে পেরেছে। বাজেয়াপ্ত নথি হাতে নিয়ে সম্প্রতি জেলে গিয়ে পার্থকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। তারপর আদালতে নথি জমা দেন তাঁরা। ২০২২ সালের ২২ জুলাই থেকে জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ।
এছাড়া অক্টোবর মাসের শুরুতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে হাজির করানো হয়। সেখানে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয় যে, টেট নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অয়ন শীলকে তদন্তের স্বার্থে হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। অনুমতি মিলতেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। এখন প্রেসিডেন্সি জেলেই আছেন পার্থ। এবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই বলে সূত্রের খবর। আর তাতেই আরও তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছেন সিবিআই অফিসাররা।