এবার পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও সক্রিয় হয়ে উঠল সিবিআই। অয়ন শীল ঘনিষ্ঠ দালাল দেবেশ চক্রবর্তীকে এবার তলব করল সিবিআই। কদিন আগেই পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট জমা দেন সিবিআই অফিসাররা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দেবেশ চক্রবর্তীর নাম রয়েছে। তাই এবার তাঁকে তলব করা হয়েছে। আজ, সোমবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। দেবেশ এই দুর্নীতিতে মিডলম্যানের কাজ করতেন বলে সিবিআই তথ্য পেয়েছে। তাই সিবিআই জানতে চায়, মিডলম্যান হিসাবে আর কারা কাজ করতেন।
আর মিডলম্যান হওয়ার দরুণ দাতা এবং গ্রহীতা দু’জনকেই চেনার কথা দেবেশের। কার কাছ থেকে দেবেশ টাকা নিয়ে কার হাতে তুলে দিতেন সেসব যাবতীয় তথ্য দেবেশ চক্রবর্তীর থেকে পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। তাঁর বয়ান আজ রেকর্ড করা হবে। সিবিআই যে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে তাতে অয়ন ঘনিষ্ঠ দেবেশই ৬০০ জনের বেশি চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগের জন্য পাঠিয়েছিলেন। সুতরাং শুধু টাকাপয়সার লেনদেনে থেমে থাকেনি বিষয়টি। বাড়তি রোজগার করতে চাকরির বিনিময়ে টাকাও নিয়েছেন দেবেশ।
আরও পড়ুন: পুজো কমিটি কার দখলে থাকবে? তুমুল ধস্তাধস্তিতে মৃত্যু তৃণমূল কর্মীর, কাঠগড়ায় কাউন্সিলর
এখানেই শেষ নয়, সূত্রের খবর, পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তকারীদের নজরে আছেন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে নেতা–মন্ত্রীরাও রয়েছেন সিবিআই জানতে পেরেছে। সেই তালিকা অনুযায়ী একের পর এক সবাইকেই তলব করা হবে। চলতি সপ্তাহেই পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেখানে প্রথমেই নাম আছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাঁচু গোপাল রায় এবং অয়ন শীলের। করোনাভাইরাসের সময় দক্ষিণ দমদম পৌরসভায় হঠাৎ করেই ২৯ জনের চাকরি হয়েছিল। আর এই নিয়োগে সম্পূর্ণ দুর্নীতি হয়েছে। নিয়ম মেনে এই নিয়োগ হয়নি বলেই সিবিআইয়ের দাবি।
এই দুর্নীতির পিছনে মূল কারিগর ছিলেন অয়ন শীল। তাঁর বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি মেলে। তার উপর ভিত্তি করে হয় তদন্ত। সেখানে বহু তথ্য বেরিয়ে আসে। জেরায় কিছু কথা স্বীকার করেন অয়ন শীল। ইডির তদন্তে ব্যবসায়ী অয়ন শীলের নাম প্রথম প্রকাশ্যে আসে। তাঁকে জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে রাজ্যের নানা পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির নেপথ্যে যোগসাজশ রয়েছে তাঁর। সিবিআইয়ের দাবি, অয়ন শীলের সংস্থা রাজ্যের একাধিক পুরসভাগুলিতে নিয়োগের দায়িত্বে ছিল। তার জেরেই পুরসভার চেয়ারম্যানদের সঙ্গে অয়নের সম্পর্কও আলাদা মাত্রা পায়। তারপরই নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে গোপন আঁতাত হয় বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের।