প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির নথি কোথায়? এই প্রশ্নই কালঘাম ছুটিয়ে দিল সিবিআই অফিসার থেকে আইনজীবীদের। কারণ অভিযুক্তদের কাছে উপযুক্ত নথি দিতে পারেনি সিবিআই। যা চরম ব্যর্থতার সামিল। এমনটা যে হতে পারে তা কেউ কল্পনাও করতে পারছেন না। আর এই মামলায় এমন বিষয় প্রকাশ্যে আসায় আদালতে চরম ভর্ৎসিত হল সিবিআই। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি করেছিল সিবিআই। আর তার জেরে গ্রেফতার হয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে একাধিক ব্যক্তি। কিন্তু তাঁদের কাছে প্রয়োজনীয় নথি সঠিক সময়ে দিতে পারেনি সিবিআই বলে অভিযোগ। এই কারণে আজ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে। কেন দেরি হল নথি দিতে? সেটা জানতে চেয়েছেন বিচারক।
সিবিআইয়ের এমন কাণ্ড দেখে হতবাক বিচারকও। যারাই অভিযোগ তুলল তারাই নথি দিতে পারল না অভিযুক্তদের! এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন অনেকে। কারণ প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ২৭ ডিসেম্বর একটি চার্জশিট জমা দেয় সিবিআই। সেখানে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল অয়ন শীল ও সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম ছিল। আজ, শুক্রবার অভিযুক্তদের আইনজীবীদের কাছে উপযুক্ত নথি সরবরাহ করতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। কিন্তু সিবিআই নথি জমা দিতে পারেনি। এই দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলে দিল আদালত।
আরও পড়ুন: সেভক–রংপো রেল প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে? এবার সময় জানিয়ে দিল নির্মাণ সংস্থা
একদিন আগেই ইউজিসি–নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলা বন্ধ করে দিয়েছে সিবিআই। তারপর নথি জমা দিতে পারছে না প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। অথচ চার্জশিট দিয়ে বসে আছে। এমন সব কাণ্ডকারখানায় বিচারক স্তম্ভিত। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেই ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায় সিবিআই। কিন্তু সেটা করা এখনও সম্ভব হয়নি। বারবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাঁকে হাজিরও করা যায়নি আদালতে। আজ, শুক্রবার বিচারভবনে কালীঘাটের কাকুর বিষয়টিও তুলে ধরে সিবিআই। তবে ‘কালীঘাটের কাকু’র আইনজীবী সোমনাথ সান্যাল জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর মক্কেলকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সিবিআই সূত্রে খবর, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অয়ন শীল এবং সন্তু মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক তথ্য প্রমাণ মিলেছে। চার্জশিটে সে সব কথার উল্লেখও করা হয়েছে। যদিও একই মামলায় অভিযুক্ত ‘কালীঘাটের কাকু’ অথবা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া সিবিআইয়ের এখনও বাকি। সেটাতে কেন দেরি হচ্ছে? উঠছে প্রশ্ন। গতকাল আরজি কর হাসপাতালের মামলা নিয়েও সিবিআইকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল। আবার আজও ভর্ৎসনার মুখে পড়ল সিবিআই। গতকাল বিচারক আরজি কর হাসপাতালের মামলায় সিবিআইকে শোকজ করেন।