অসুস্থতার দোহাই কোনও কাজে লাগল না। বরং বিপাকেই পড়লেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাই তিনি নমুনা দেওয়ার অবস্থায় নেই কণ্ঠস্বরের বলে জানানো হয়েছিল আদালতে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হল না। সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত আজ, শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছে যে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’কে ভয়েস স্যাম্পল দিতেই হবে। বিচারক নির্দেশ দেন, আগামী ২১ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে।
আদালতের নির্দেশ অমান্য করার উপায় নেই। আর তিনি কতটা অসুস্থ এবং কতটা সুস্থ তা প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছেন সিবিআই অফিসাররা। সিবিআই এদিন আদালতে জানিয়ে দেয়, তাদের কাছে বেশ কিছু মোবাইল ফোনের রেকর্ডিং আছে। যা থেকে তাতে মিলেছে ‘কালীঘাটের কাকুর’ কণ্ঠস্বর। এমনকী আরও কিছু নথি রয়েছে বলে জানান তদন্তকারী অফিসাররা। এবার সেটাই পরীক্ষা করে মিলিয়ে দেখতে চান তাঁরা। আগে আদালতের নির্দেশ ছিল, আগামী ১০ জানুয়ারি তারিখের মধ্যে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। তারপর ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁকে কোর্টে এসে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু হঠাৎ তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি আছেন এবং আজ হাজিরা দিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: চলন্ত মেট্রোয় যুবতীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ, যুবককে চড়–থাপ্পড় মারলেন আম জনতা
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উঠে আসে ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। তার জেরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র আবার লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস কোম্পানিতে উচ্চপদে ছিলেন। যে কোম্পানি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই আবহে সিবিআই জানিয়ে দিয়েছে, তাঁরা পুরোপুরি প্রস্তুত কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর নিতে। যেহেতু ‘কালীঘাটের কাকু’ আজ হাজিরা দেননি, তাই তারা এদিন কোনও নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি। আবার আবেদনের ভিত্তিতে তারা নমুনা সংগ্রহ করতে চেয়ে বিশেষ আদালতে জানালে আগামী ২১ তারিখ ‘কালীঘাটের কাকুর’ কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের নির্দেশ দেন বিচারক।
এই পরিস্থিতিতে অসুস্থতা ঢাল হতে পারল না ‘কালীঘাটের কাকুর’। গত ৬ জানুয়ারি ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ভার্চুয়ালি পেশ করা হয়েছিল অসুস্থ ‘কালীঘাটের কাকু’কে। বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এই মামলায় মোট ৫৪ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই প্রথম প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের চার নম্বর ধারায় ‘কালীঘাটের কাকুর’ বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। কিছুই তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন আদালতে। শরীর আগের থেকে ভাল আছে বলে তাঁকেই বলতে শোনা যায়। এবার কণ্ঠস্বরের নমুনা দেওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না বলে মনে করা হচ্ছে।