রিজেন্ট পার্ক কাণ্ডে এবার নয়া মোড়। যা নিয়ে গুঞ্জন ছিল সেটাই বাস্তবে দেখা গেল। আর তা নিয়ে এখন আলোড়ন তুঙ্গে উঠেছে। কারণ বস্তাবন্দি অবস্থায় যে দেহ উদ্ধার হয়েছে সেটি এক নাবালিকার। এই তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর দ্রুতগতিতে এগোল তদন্ত। ওই নাবালিকা সরশুনার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। তাছাড়া তদন্ত যতই এগিয়েছে ততই নানা নতুন তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। তদন্তে উঠে এসেছে ওই নাবালিকা লিভ ইন সম্পর্কে ছিল। আর এই লিভ ইন পার্টনার ওই ঘটনার পর থেকেই চম্পট দিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
তাহলে কি ওই লিভ ইন পার্টনারই খুন করেছে নাবালিকাকে? খুনের উদ্দেশ্য কী? আর গা–ঢাকা দিল কেন যুবকটি? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। গত ২৩ জুলাই, দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্ক এলাকার খালে ভেসে ওঠে বস্তাবন্দি মৃতদেহ। ওই দেহ উদ্ধারের পর সেটি পাঠানো হয় ময়নাতদন্তে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পায় পুলিশ। তবে ওই নাবালিকার নাম–পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। প্রায় ৬দিন পর নাবালিকার নাম–পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে, ওই দেহটি একজন নাবালিকার। দেহ উদ্ধারের সময় নাবালিকার পেটে প্রচুর জল ও কাদা পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: ‘এটা কারও পছন্দ অপছন্দের বিষয় নয়’, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে সরব কল্যাণ, পাল্টা দেন শিবরাজ
জলে ঢুবে থাকলে জল–কাদা পাওয়াটা স্বাভাবিক বলে মনে করছে পুলিশ। কিন্তু কী এমন ঘটল যার জন্য নাবালিকাকে খুন করতে হল? তাহলে কি নাবালিকা বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল? এই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। যদিও ময়নাতদন্তে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হন যে, জীবন্ত অবস্থাতেই জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ওই নাবালিকার। সুতরাং যখন বস্তাবন্দি করা হয়, তখনও নাবালিকা জীবিত ছিল বলেই পুলিশকে তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এত বড় একটা ঘটনা কেউ জানতে পারল না? সন্দেহ এখান থেকেই হচ্ছে। কারণ নাবালিকার হাতে বেশ কয়েকটি জায়গায় সূঁচ ফোটানোর চিহ্ন মিলেছে। সেক্ষেত্রে তো নাবালিকার চিৎকার করার কথা।
এইসব সন্দেহ থেকেই তদন্তের গতি বাড়ায় পুলিশ। আর হাতে আসে আর একটা তথ্য। সেটি হল—এই নাবালিকা মাদকের নেশার সঙ্গে জড়িত ছিল। লিভ ইন পার্টনারের সঙ্গে প্রায়ই মাদকের নেশা করত। এমনকী একাধিকবার ওয়াইন পানও করেছিল। সুতরাং খুনের সময় এবং সূঁচ ফোটানোর সময় নাবালিকাকে নেশায় আচ্ছন্ন করে রাখা হয়েছিল কিনা সেটাই খুঁজতে শুরু করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মিলেছে ড্রাগের নমুনা। অতিরিক্ত মাদক সেবনে অচৈতন্য হয়ে পড়ে নাবালিকা। তখন জীবন্ত অবস্থায় তাকে বস্তাবন্দি করে খালের জলে ফেলে দেওয়া হয় বলে মনে করছে পুলিশ। এই কাজের সঙ্গে জড়িত নাবালিকার লিভ ইন পার্টনার বলেও সন্দেহ পুলিশের।