পাত্র-পাত্রীর রেজিস্ট্রি হয়ে গেলেই যে সেই বিয়ের আইনি স্বীকৃতি রয়েছে তা নয়। যদি সে ক্ষেত্রে দু'পক্ষের সম্মতি না থাকে তাহলে আইনের চোখে সেই বিয়ে হল নকল বিয়ে। সেই বিয়ের তার কোনও স্বীকৃতি নেই। সম্প্রতি একটি মামলা প্রসঙ্গে এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পাত্র-পাত্রী সম্মতি না থাকলে রেজিস্ট্রি হয়ে গেলেও সে বিয়ের কোনও আইনি স্বীকৃতি নেই। সেটা নকল বিয়ে হিসেবে গণ্য করা হবে।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, বাঁকুড়ার এক মহিলা বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আদালতে মামলা করেছিলেন। ভয় দেখিয়ে রেজিস্ট্রি কাগজে সই করিয়ে তাকে বিয়ে করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই বিয়েকে তিনি কোনওভাবেই মেনে নিতে না পেরে বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। নিম্ন আদালত মহিলার পক্ষে রায় দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মহিলার স্বামী। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা একটি কম্পিউটার সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন সেই কম্পিউটার সেন্টারের শিক্ষক ছিলেন তার স্বামী। সেই সূত্রে একে অপরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তারপরে দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে রেখে দেয় ওই যুবক। দুজনের মধ্যে বয়সের পার্থক্য প্রায় ১০ বছর।
এরপরে ওই যুবক মহিলাকে ছবি ফাঁস করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এবং ব্ল্যাকমেল করে বিয়ে করে। সেই সময় মহিলার বয়স ছিল ১৯ বছর। মহিলার অভিযোগ, রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে গিয়ে তাকে দুটি কাগজে সই করিয়ে নেয় ওই যুবক। তারপর তাকে জানায় যে তাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ঘটনাটি মহিলা তারা পরিবারের লোকেদের জানান। এরপর তিনি বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সুগত মজুমদারের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় এই বিয়েতে মহিলার সম্মতি না থাকায় আইনের চোখে সেটি নকল বিয়ে। এরপরে যুবকের আর্জি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।