দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি দক্ষিণ কলকাতার বিক্রমগড় ঝিল। তার ফলে কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে বিশাল এই ঝিলটি। শুধু তাই নয়, চারপাশে আবর্জনাতেও ভরে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এই ঝিল সংস্কারের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন স্থানীয়রা। ১০ বছর আগে ঝিলটি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, মাঝপথেই থমকে গিয়েছিল সেই কাজ। ১০ বছর পর ফের এই বিক্রমগড় ঝিল সংস্কারের কাজ শুরু হল। জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। এদিন সকালে দেখা যায়, ঝিলে মেশিন নামিয়ে কচুরিপানা সরানোর কাজ করা হচ্ছে। (আরও পড়ুন: শিয়ালদা থেকে উদ্ধার ৬টি বন্দুক, আট রাউন্ড গুলি, STF-এর জালে ১)
আরও পড়ুন: বিক্রমগড় ঝিলের একটি অংশ বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগ, উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা
বিশাল এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই ঝিলের আয়তন প্রায় ৩০ হাজার বর্গমিটার। স্থানীয়দের অনেকেই ঝিলটিকে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম ‘ফুসফুস’ বলে থাকেন। তবে অভিযোগ, চারিদিক থেকে এই ঝিলটি দখল হতে হতে আকার অনেকটাই ছোট হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া, দীর্ঘদিন ধরে অযত্নে থাকার ফলে নোংরা-আবর্জনা এবং কচুরিপানায় ভরে গিয়েছে ঝিলটি। বেআইনিভাবে ঝিল ভরাটের অভিযোগও উঠেছে। উল্লেখ্য, এই ঝিল সংস্কার ঘিরে স্থানীয়দের দাবি দীর্ঘ দিন ধরেই রয়েছে। বাম আমলে বিক্রমগড় ঝিল বাঁচাও আন্দোলন জোরদার হয়েছিল। সেই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত। পরে সরকারের পালা বদল ঘটে। (আরও পড়ুন: দিঘায় মুসলিমরাও যায়, জগন্নাথ মন্দিরের পাশাপাশি সেখানে মসজিদ তৈরি হোক: ত্বহা)
আরও পড়ুন: বাংলায় ৮৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে পারে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল? দাবি রিপোর্টে
তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৪ সালে বিক্রমগড় ঝিল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তিনি এর জন্য ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এরপর একটি কমিটি গঠন করে ঝিল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। সেইসময় শালবল্লা দিয়ে ঝিলের চারপাশ ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। কচুরিপানাও পরিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু, তারপর কাজ থমকে যায়। যদিও পুরসভার তরফে দাবি করা হয়, দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। ফলে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
সম্প্রতি, পুরসভার মাসিক অধিবেশনে তপন বাবু এ নিয়ে সরব হন। তখন পুরসভার পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানান, নতুন করে সাড়ে তিন কোটি টাকা ঝিল সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। তারপরেই শুরু হল ঝিল সংস্কার। জানা গিয়েছে, এই ঝিলকে এবার নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। পরিষ্কার করার পাশাপাশি ঝিলের চারপাশে হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। শুধু তাই নয়, ঝিলে যাতে কেউ নোংরা আবর্জনা ফেলতে না পারে তার জন্য চারপাশ ঘিরে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে ৯৩ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী দাস জানান, কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই তিনি এই কাজের জন্য বহুবার আবেদন করেছেন। অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়েছে।