যাদবপুরের সাম্প্রতিক অশান্তি নিয়ে নাকি ব্রাত্য বসু ও ওয়েবকুপা-র উপর বেজায় চটেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়! সূত্রের দাবি, এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই কানাঘুষো চলছিল। এবার কার্যত সেই জল্পনাতেই অদৃশ্য সিলমোহর পড়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় 'ভূতুড়ে ভোটার' সংক্রান্ত যে ভার্চুয়াল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন, সেই বৈঠকে বাকি সকলে ডাক পেলেও ব্রাত্য থেকে গিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ওয়েবকুপা-র সদস্যরা!
শোনা যাচ্ছে, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই নাকি জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে, সবটাই হচ্ছে ভিতর ভিতর। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করছেন না। সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য বলছে, পরবর্তীতে হয়তো অভিষেক নিজে ওয়েবকুপা-কে এই বৈঠকে না ডাকার কোনও আনুষ্ঠানিক কারণ জানালেও জানাতে পারেন।
তবে সূত্রের দাবি, গত ১ মার্চ যাদবপুরে যে ঘটনা ঘটেছে, তাতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ অভিষেক। বস্তুত, ওই ঘটনার পর শাসকদলের একাধিক সদস্য ব্রাত্যর পাশে দাঁড়ালেও অভিষেক কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে সেভাবে মুখ খোলেননি। বরং, তিনি গোটা ঘটনা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, আসলে যাদবপুরে ওয়েবকুপা-র অনুষ্ঠান হলে যে বিশৃঙ্খলার একটা সম্ভাবনা থাকবে, সেটা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল বলে মনে করেন অভিষেক। এই আভাস নিশ্চয় ওয়েবকুপা-র নেতৃত্বও পেয়েছিল। তারপরও কেন যাদবপুরেই ওই বার্ষিক সভা আয়োজন করা হল, সেটাই অভিষেকের প্রশ্ন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
তাঁরা বলছেন, যদি ওই সভা অন্য কোথাও হত, তাহলে কোনও বিশৃঙ্খলাই হত না। কিন্তু, সেটা না করে আদতে বিরোধী শিবিরের হাতে রাজনৈতিক ইস্যু তুলে দিয়েছে ওয়েবকুপা নেতৃত্ব। মনে করা হচ্ছে, এই কারণেই অভিষেকের আগামী ভার্চুয়াল বৈঠকে ওয়েবকুপা-কে ব্রাত্য রাখা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওই বৈঠকে যাঁরা যোগ দেবেন, সেই দীর্ঘ তালিকায় রয়েছেন - দলের সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের সকল সদস্য এবং কলকাতা-সহ সকল পুরনিগম ও পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলর। তাঁদের সবাইকেই বৈঠকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে সবথেকে বড় ইস্যু হচ্ছে ভূতুড়ে ভোটার। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে এই বিষয়টি নিয়ে সুর চড়ান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটার তালিকা থেকে ভূতুড়ে - অর্থাৎ - ভুয়ো ভোটার খুঁজে বের করতে এবং তাঁদের বিদেয় করতে কোর কমিটিও গড়ে দেন তিনি।
সেই কোর কমিটির প্রথম বৈঠক হয় সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে। কিন্তু, সেই বৈঠকে অভিষেক ছিলেন না। আর, এবার ওই একই বিষয়ে আয়োজিত হতে চলা ভার্চুয়াল বৈঠকের নেতৃত্ব দেবেন তিনিই।