গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন করিয়ে চোখের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৫ জন রোগী। সেই অস্ত্রোপচারের ঘটনায় প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ল স্বাস্থ্যভবনে। তাতে কীভাবে চোখের সংক্রমণ ছড়িয়েছে? সেই তথ্য সামনে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অস্ত্রোপচারের সময়েই সংক্রমণ ছড়িয়েছে রোগীদের চোখে। সেখানে ব্যবহার করা ফ্লুইড এবং ওষুধ থেকে সংক্রমিত হয়েছেন এতজন রোগী। পাশাপাশি ঘটনার পরেই রোগীদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অফথালমোজিতে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকজনকে নতুন করে অস্ত্রোপচার হয়েছে। অনেকেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গত সপ্তাহের শুক্রবার এবং শনিবার ছানি অপারেশন হয়েছিল ২০ থেকে ২৫ জন রোগীর। তাঁদের মধ্যে ৪ জন ছিলেন মহিলা এবং বাকিরা পুরুষ। অস্ত্রোপচারের পরেই ঘটে বিপত্তি। রোগীদের চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়। এদিকে, এই ঘটনার পরেই রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায়। বিষয়টি পৌঁছয় স্বাস্থ্য ভবনে। পরে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে চোখের অপারেশন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে কীভাবে সংক্রমণ ছড়ালো তা জানতে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অফথালমোজির বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করা হয় একটি তদন্ত কমিটি। গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকেও আলাদাভাবে এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই তদন্তের রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, অপারেশনের সময় চোখের ভিতরের স্তরে আবরণ তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের টেবিলে ব্যবহৃত ফ্লুইড থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
এই রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এই ব্যাচের সমস্ত ওষুধ এবং ফ্লুইড গার্ডেনরিচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ মনে করা হচ্ছে সেগুলি সঠিক মানের ছিল না। পাশাপাশি যারা এই সময় ওষুধ ও ফ্লুইড সরবরাহ করেছে তাদেরকেউ চিহ্নিত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রোগীদের যে ওষুধ দেওয়া হয়েছিল সেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহৃত সমস্ত উপকরণ কালচার করার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালের মাইক্রো বায়োলজি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, সংক্রমিত রোগীদের দৃষ্টি ফিরবে কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে পরিবারের।