এ এক অবাক করা কাণ্ড! প্রতিবারই রোগীর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ! একমাসের ব্যবধানে এই ধরনের চারটি ঘটনা সামনে এসেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। চিকিৎসকরা মনে করছেন, উপসর্গের উপস্থিতিতে রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ার ঘটনা আসলে নিউ নর্মাল।
কেমন ব্যাপার সেটা? গত ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এক মহিলা ইন্টার্নকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরদিন ট্রু-ন্যাটে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায়, ফুসফুসের চারপাশে ফ্লুইড জমেছে।
ঠিক তার পরদিন সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখ শারীরিক অস্বস্তি বাড়লে পালস অক্সিমিটারে চিকিৎসক ছাত্রী দেখেন, দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ৮৬ এবং তা দ্রুত পতন হচ্ছে। কিন্তু আরটি–পিসিআরেও রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এসএসকেএমে দু’দফায় তরুণীর করোনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতিবারই আরটি–পিসিআরের রিপোর্ট, ছাত্রী কোভিড নেগেটিভ!
বেনজির এই ঘটনা দেখে সিসিইউয়ে রেখে স্টেরয়েড–সহ অন্যান্য ওষুধ দেওয়া হলে চিকিৎসক পড়ুয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। একই ঘটনা ঘটেছে আরও তিন রোগীর সঙ্গে। এক গাড়ির চালকের জ্বরের পাশাপাশি দুর্বলতা দেখা দেয়। বাগুইআটির বাসিন্দা গাড়িচালকের স্ত্রীও একই উপসর্গে ভুগছিলেন। প্রৌঢ়ের ৬০ বছরের বৃদ্ধ দাদার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তিনজনের করোনা পরীক্ষা করানো হয়। কিন্তু কারও দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মেলেনি। তাঁকেও করোনার দাওয়াই দেওয়া হয়। আপাতত তিনি সুস্থ। বাকিদের হোম আইসোলেশনে চিকিৎসা হয়।
এক চিকিৎসক জানান, সবচেয়ে খারাপ রোগীদের ক্ষেত্রে একাধিকবার তাঁরা এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। ১৮ বছরের এক তরুণের তিন বার করোনা পরীক্ষা করেও ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। রোগীর চিকিৎসা কী হবে, তা আরটি–পিসিআরের রিপোর্টের উপরে নির্ভর করবে না। উপসর্গ কী রয়েছে তা বুঝে চিকিৎসা করা উচিত।
সম্মিলিতভাবে বেশ কয়েকজন চিকিৎসক জানান, উপসর্গ থাকলেও আরটি–পিসিআরে রিপোর্ট নেগেটিভ। এই নজির বহু রয়েছে। তাই করোনা সন্দেহ করেই চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া উচিত।