মাঝে আর একটা দিন। তারপরই রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবস। গোটা দেশ তাতে মেতে উঠবে। মানুষের ঢল নামবে রাজপথে। আসলে এই দিনটিতে অনেকে কলকাতা শহরের দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে ঘুরতে যান। ফলে যানবাহনের চাপ যেমন থাকে তেমন মানুষের চাপ থাকে রাজপথে। এখন ভারত–বাংলাদেশের সম্পর্ক মধুর নেই। ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় ঢুকে পড়ছে মানুষ এবং জঙ্গিরা। তাই এবারের শহর নিরাপত্তায় বাড়তি কড়াকড়ি করা হবে। আসলে বাংলাদেশ ইস্যুর জন্য বেড়েছে অনুপ্রবেশকারী নিয়ে চিন্তা। তাই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার কথা ভেবেছে কলকাতা পুলিশ। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। ওই দিন কলকাতা জুড়ে দু’হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন থাকবে রাজপথে।
বড়দিন এবং বর্ষবরণ সামলে কলকাতা পুলিশ যখন একটু নিঃশ্বাস নিচ্ছে তখনই চলে এসেছে সাধারণতন্ত্র দিবস। ফলে এই দিনে শহরে ভিভিআইপিরা যেমন থাকবেন তেমন সাধারণ মানুষেরও ঢল নামবে। সুরক্ষা, নিরাপত্তা দিতে হবে সকলকেই। তাই কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার সাধারণতন্ত্র দিবস। সেদিন ১১৯ ইন্সপেক্টর, ৪৬ এসিপি পদমর্যাদার পুলিশ, ২২ জন ডিসি–সহ ২ হাজার ৩০০ ফোর্স মোতায়েন থাকবে শহরের রাজপথে। একাধিক পয়েন্টে হবে নাকা চেকিং। হোটেল এবং রেস্তোরাঁগুলিতে বাড়তি নজর রাখবে পুলিশ। এমনকী ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, আলিপুর চিড়িয়াখানা এবং ধর্মতলা চত্বরে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘কেন্দ্রের অচল স্বাস্থ্য পরিষেবার মধ্যে একটি বাতিস্তম্ভ সেবাশ্রয়’, তুলোধনা করলেন অভিষেক
ওইদিন রেড রোডে কুচকাওয়াজ থাকে। সেখানে হাজির থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা। তাই শুধু রেড রোডে ১১টি ওয়াচ টাওয়ার বসানো হয়েছে। আর শহরের ২২টি স্পেশ্যাল জোনে পৃথকভাবে নজরদারি চালানো হবে। যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন জেলা থেকেও মানুষজন আসেন কলকাতা শহরে। তবে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডের জন্য ২৬ জানুয়ারি ভোর সাড়ে ৫টা থেকে কলকাতার নানা রাস্তা বন্ধ থাকবে। গাড়ি চলাচল করবে না। প্যারেড শেষ হলেই ওই রাস্তা খুলে দেওয়া হবে।
কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, সাধারণতন্ত্র দিবসে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আর ওই রাস্তাগুলির মধ্যে রয়েছে—হসপিটাল রোড, লাভারস লেন, খিদিরপুর রোড, আরআর অ্যাভিনিউ, গোষ্ঠ পাল সরণি, কুইন্স ওয়ে, ডাফলিন রোড, আউটট্রাম রোড, এসপ্ল্যানেড র্যাম্প। শহরে কুচকাওয়াজ নির্বিঘ্নে করার জন্যই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আর সম্প্রতি রাজ্য এবং কলকাতা শহর থেকে একাধিক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছে। জঙ্গিও ধরা পড়েছে। তার মধ্যে রয়েছে আবার পাসপোর্ট জালিয়াতির ঘটনা। সব মিলিয়ে সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা পুলিশ প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।