তখনও ভালো করে আলো ফোটেনি। গভীর ঘুমে কলকাতা। আর আন্দোলনের বিনিদ্র রাত কাটাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেই সময় রাত তিনটে বেজে ৪৯ মিনিটে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে একটি মেল করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, 'রেসপেক্টেড ম্যাম,
ডেপুটি হেলথ মিনিস্টারের প্রেস মিট দেখে জানতে পারলাম আপনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী। তবে স্বাস্থ্যসচিবের কাছ থেকে যে মেল ১০ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা ১২ মিনিটে পেয়েছিলাম তাতে তেমন কিছু উল্লেখ ছিল না। সেই প্রসঙ্গে আমাদের মূল দাবি আমরা উল্লেখ করছি। '
১) জাস্টিস ফর অভয়া- এটা রাজ্য সরকারে ব্যাপার নয়, তবে আমরা চাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সিবিআই, সুপ্রিম কোর্ট তদন্তকে যেন এগিয়ে নিয়ে যায় ও দেরি না করে দোষীদের যেন শাস্তি দেয়।
২) ডিএমই, ডিএইচএস ও স্বাস্থ্যসচিবকে অপসারণ করতে হবে। কারণ সেমিনার রুমের পাশের রুম ভাঙার ক্ষেত্রে তাঁদেরই সই ছিল। আমরা মনে করি গোটা স্বাস্থ্য পরিকাঠামোতে দুর্নীতিতে তাঁরাও জড়িত।
৩) বিনীত গোয়েলকে অপসারণ( রিমুভাল) হবে। তিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার। ডিসি নর্থ ও ডিসি নর্থের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪) সমস্ত হাসপাতাল ও সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপযুক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। সমস্ত জুনিয়র ডাক্তার, স্বাস্থ্য কর্মী বিশেষত মহিলা হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার্সদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
৫) সরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় থ্রেট কালচারের অবসান ঘটাতে হবে। মেডিক্যাল পড়ুয়া, জুনিয়র ডাক্তার ও ডাক্তারদের গণতান্ত্রিক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা নির্দিষ্ট করে আমাদের দাবি জানিয়েছি। আপনার সঙ্গেও আলোচনা করতে আমরা আগ্রহী। অন্তত ৩০জনের প্রতিনিধি দল যাবে। কারণ একাধিক মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
গোটা রাজ্য এই মিটিংয়ের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা জানি আপনার প্রশাসন বিভিন্ন ক্ষেত্রে মিটিংয়ের লাইভ টেলিকাস্ট করে। আমরা চাই এখানেও তেমনটাই হবে।
ইয়োরস সিনসিয়ারলি
ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট।
মমতাকে এভাবেই চিঠি লিখেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। একেবারে ভোরবেলা এই চিঠি লেখা হয়েছিল। সেখানে সরাসরি বলা হয়েছিল ৩০জন যেতে চান তাঁরা। সেই সঙ্গেই সেই মিটিংয়ের যাতে লাইভ টেলিকাস্ট করা হয় সেই দাবিও তুলেছিলেন তাঁরা। একেবারে নির্দিষ্ট অভিযোগ। নির্দিষ্ট দাবি। সেই দাবি থেকে সরেননি তাঁরা। সেই দাবির কথাই তাঁরা উল্লেখ করে দিলেন চিঠিতে।