চলতি বছরে অবসর নেওয়া পুর কর্মীদের একাংশ গ্র্যাচুইটি এবং এককালীন টাকা পাননি। এমনই অভিযোগ উঠেছে কলকাতা পুরসভার বিরুদ্ধে। বিশেষ করে নভেম্বর পর্যন্ত যারা অবসর নিয়েছেন তারা এই টাকা থেকে বঞ্চিত। এই অবস্থায় পুর কর্মীদের বেতন নিয়েও সংশয় দানা বেঁধেছে পুরসভার অন্দরে। যদিও পুরসভার আধিকারিকরা আশ্বাস দিয়েছেন, চিন্তার কোনও কারণ নেই। সব টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: মা–ক্যান্টিনের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনাতে পড়েছে কলকাতা পুরসভা, ভিড় বাড়ছে কেন?
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে যে সমস্ত কর্মীরা অবসর নিয়েছেন তার মধ্যে মাত্র ৬০ শতাংশ এই টাকা পেয়েছেন। তবে বাকি ৪০ শতাংশ অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা এই টাকা পাননি। এই অবস্থায় পুরসভার কোষাগারের অবস্থা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সূত্রের খবর, এবার আশানুরূপভাবে কর আদায় হয়নি। যার ফলে পুরসভার কোষাগারের অবস্থা সঙ্গীন। ফলে অবসরপপ্রাপ্ত কর্মীদের বেতন কীভাবে মেটানো হবে তাই নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ধাপে ধাপে এই সব অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কেন মেটানো হয়নি টাকা?
সূত্রের খবর, এবার গতবছরের তুলনায় সম্পত্তি কর কম আদায় হয়েছে। শুধুমাত্র এপ্রিল থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কর আদায় ৭ কোটি ৭৫ লক্ষ কমেছে। এই অবস্থায় অবসরকালীন কর্মীদের পেনশন বাবদ প্রয়োজন ১৫০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ঠিকাদারদের পুরসভার কাছ থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা মতো পাওনা রয়েছে। এই অবস্থায় কর আদায়ের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। গত মাসে এনিয়ে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। তাতে পুর কর্তৃপক্ষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ার ফলে এই সমস্যা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকরা। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে। এরফলে বকেয়া পরিশোধ করতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে পুরসভাকে। এরফলে পুরসভায় ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে দু’হাজার কোটি টাকা।
তবে শুধু এবছরের অবসর নেওয়া কর্মীরাই নন, গত বছরে অবসর নেওয়া কর্মীরাও অনিয়মিত টাকা পাচ্ছেন। এর মধ্যেই কেউ বাড়ি তৈরির জন্য, কেউ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য ওই টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, বকেয়া মেটানোর দাবিতে একাধিকবার আন্দোলন হয়েছে। বিরোধীরাও সেই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এবিষয়ে কলকাতা পুরসভার ক্লার্কস ইউনিয়ন হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, এই টাকা মেটানো না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ অভিযোগ করেছেন, পুজোর সময় ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়া হচ্ছে। অথচ খেটে খাওয়া সরকারি কর্মীদের ন্যায্য অধিকারের টাকা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।