পরিবারকে না জানিয়েই সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্বীকার করে নিল রাজ্য সরকার। বুধবার রাজ্য সরকারের কাছে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবার এই মামলার বিষয়ে জানে কিনা। তাতে নেতিবাচক উত্তর দেয় রাজ্য। সেই পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট প্রশ্ন করে, পরিবার কি ভাবছে, সেটা যদি হাইকোর্ট জানতে চায়, তাহলে কি রাজ্যের কোনও অসুবিধা আছে? নির্যাতিতার পরিবারকে ছাড়া কি এই বিচারপ্রক্রিয়া চালানো সম্ভব? আজকের মধ্যেই পরিবারকে মামলার বিষয়ে জানাতে পারবে রাজ্য সরকার?
প্রমাণ লোপাটেও অতি সক্রিয়তা, এখনও তাই, দাবি বাবার
যদিও আমৃত্যু কারাদণ্ডের পরিবর্তে সঞ্জয়ের ফাঁসির আর্জি জানিয়ে রাজ্য যে মামলা করেছে, সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ প্রকাশ করেনি নির্যাতিতার পরিবার। বরং নির্যাতিতার বাবা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার কী ভাবছে, সরকার কী করছে, তা নিয়ে তাঁদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। যেদিন মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেদিন তথ্যপ্রমাণ নষ্টের ক্ষেত্রে অতি সক্রিয়তা ছিল। এখন সঞ্জয়ের ফাঁসির ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাবা।
রাজ্যের মামলার অধিকার নেই, সওয়াল সিবিআইয়ের
সিবিআই অবশ্য রাজ্যের মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার অধিকার রাজ্যের নেই বলে সিবিআইয়ের তরফে দাবি করা হয়। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী তথা ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার সওয়াল করেন, নিম্ন আদালতে যে মামলা চলেছে, তাতে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই, নির্যাতিতার পরিবার বা সঞ্জয় উচ্চতর আদালতে মামলা করতে পারে। রাজ্য সরকার সেই কাজটা করতে পারে না।
রাজ্য মামলা করতে পারে, পালটা সওয়াল
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে দাবি করা হয় যে রাজ্যের সেই অধিকার আছে। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুলিশের কাছে আরজি কর মামলার তদন্তভার ছিল। যা পরবর্তীতে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের হাতে গিয়েছিল। সেই আবহে নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই, নির্যাতিতার পরিবার এবং সঞ্জয়ের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও মামলা করতে পারে বলে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী দেবাশিস রায়রা।
সেই সওয়াল-জবাব শোনার পরে আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানির ধার্য করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্য আদৌও সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে মামলা করতে পারে কিনা, সেটা সেদিন বোঝা যাবে। যে সঞ্জয়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ) ধারা, ৬৬ ধারা (ধর্ষণের এমন আঘাত করা, যে কারণে মৃত্যু হতে পারে) এবং ১০৩ (১) ধারায় (খুন) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৬৬ ধারার আওতায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন শিয়ালদা আদালতের বিচারক। বাকি দুটি ধারার আওতায়