সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে কাজে গতি দেখা গিয়েছে কলকাতা পুলিশের। আরজি কর কাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত আছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। যদিও পুলিশ প্রথমে সেই দাবি খারিজ করেছিল। তবে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কলাকাত পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল মন্তব্য করেছিলেন, 'এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত থাকলে ৪-৫ দিনে তাদের গ্রেফতার করা হবে।' এহেন পরিস্থিতিতে গতকাল পুলিশি জেরার মুখে পড়ে আরজি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের চার চিকিৎসক সহ মোট ৭ জন। জানা গিয়েছে, এই চারজনই নাকি নির্যাতিতার সঙ্গে বসে ডিনার করেছিল হত্যাকাণ্ডের রাতে। এদিকে নির্যাতিতার পরিবারকে ফোন করে প্রথম এই মৃত্যুর খবর জানানো অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারকে আজ পুলিশ তলব করেছে। উল্লেখ্য, নির্যাতিতার পরিবার দাবি করে, প্রথমে তাঁদের জানানো হয়েছিল যে মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। (আরও পড়ুন: বদলির পর ন্যাশনাল মেডিক্যালেও ক্ষোভের মুখে সন্দীপ ঘোষ, বিস্ফোরক খোদ TMC বিধায়ক)
আরও পড়ুন: 'স'-তে আটকে কাঁটা, আরজি কর কাণ্ডে তির এবার 'ভিতরের ৪ জনের' দিকে, নাম ঘিরে তরজা
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে মমতা ডেডলাইন বেঁধে দিতেই 'নিজেদের মান' বাঁচাতে ঝাঁপ পুলিশের!
এদিকে এই সবের মাঝেই ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্যে। এদিকে নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত রিপোর্টের বিশ্লেষণও চলছে। এই আবহে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে দাবি করল, মৃত চিকিৎসকের দেহের কোনও হার ভাঙা নেই। যদিও এর আগে শোনা যাচ্ছিল যে নির্যাতিতার কলার বোন এবং পেলভিক বোন ভাঙা। তবে পুলিশের এই নায় দাবিতে যে সব বিভিন্ন তত্ত্ব উঠে এসেছে, তার মোড় অনেকটাই ঘুরে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে জেরায় ধৃত সঞ্জয় নাকি পুলিশের কাছে জানায়, সে আগে সেমিনার হলে যায়নি। অপারেশন থিয়েটার খুঁজতে খুঁজতে সেখানে গিয়ে পৌঁছেছিল। এরপরই সেই মহিলা চিকিৎসককে দেখে এই কাণ্ড সে ঘটায়। তবে সেই মহিলা চিকিৎসকের ওপর যে অমানসিক অত্যাচার হয়েছে, তা থেকেই অনেকে দাবি করতে থাকে যে এই ঘটনা এজনের পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয়। তবে পুলিশ এবার দাবি করল, মৃত চিকিৎসকের কোনও হাড় ভাঙেনি। যা নিয়ে নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে আজ আরজি করের সহকারী সুপারকে তলব করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, মৃতার পরিবার অভিযোগ করে, প্রথমে হাসপাতাল থেকে তাঁদের ফোন করে বলা হয়েছিল, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরে দেখা যায়, সেটি খুনের ঘটনা। ধর্ষণ যে হয়েছে, তা আরও পরে সামনে আসে। এই আবহে প্রশ্ন ওঠে, কেন প্রথমেই ওই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে বর্ণনা করা হয়েছিল। সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোট ৭ জন চিকিৎসককেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল লালবাজারে। এঁরা ঘটনার দিন ডিউটিতে ছিলেন। এঁদের মধ্যে ৪ জন এক সঙ্গে রাতের খাবার খেয়েছিলেন। প্রয়োজনে এঁদের আবার লালবাজারে ডাকা হতে পারে। এদিকে ধৃতের সঙ্গে আরও কেউ ছিল কি না, তা খুঁজে বের করতে এবার সমস্ত ফ্লোরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধু ঘটনার রাতের নয়, গত এক মাসের সিসিটিভি ফুটেজ সময় ভাগ করে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।