মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে অনুষ্ঠিত হয়েছিল আরজি কর কাণ্ডের শুনানি। আর শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতির হাতে তদন্তের স্টেটাস রিপোর্ট তুলে দিয়েছিল সিবিআই। সেই রিপোর্ট দেখে বিচারপতিরা রীতিমতো বিচলিত হয়ে পড়েন। পাশাপাশি তাঁরা পর্যবেক্ষণ করেন, সিবিআইকে তদন্তের জন্যে আরও সময় দিতে হবে। ঘটনার পাঁচদিন পর তদন্ত শুরু করে তাঁরা 'প্রতিবন্ধী' হয়েছে। এরই সঙ্গে নির্যাতিতার বাবার লেখা চিঠিতে যে সব 'সূত্র' মিলেছে, তা ধরে এগোনের কথাও বলেন প্রধান বিচারপতি। এই আবহে গতকাল রাতেই নির্যাতিতার বাড়িতে সিবিআইয়ের একটি দল পৌঁছে যায় বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা না নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টা কথা বলেন। (আরও পড়ুন: মুখোমুখি জেরায় আদৌ কোনও ফল মিলছে? আর কতদিন CBI হেফাজতে অভিজিৎ-সন্দীপ?)
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে 'অন্য কারও নির্দেশ'? সন্দীপ ঘোষেরও 'মাথা' খুঁজছে সিবিআই?
রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাত ৯টার পর নির্যাতিতার বাড়িতে যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পাঁচ সদস্যের একটি দল। এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময় সেখানে ছিলেন তদন্তকারীরা। চিঠির সূত্র ধরে নাকি গতকাল নির্যাতিতার মা-বাবার সাথে কথা বলেছিলেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি ক্রাইম সিনে তাঁরা কী দেখেছিলেন, সেই বিষয় নিয়েও ফের কথা হয় তদন্তকারীদের। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি গতকাল শুনানির সময় দাবি করেছিলেন, নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবার চিঠিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে গুরুত্ব সহকারে সেটি বিবেচনা করে দেখতে বলে শীর্ষ আদালত।
এই নিয়ে গকাল প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, 'আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্ত নিয়ে নির্যাতিতার বাবা যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা প্রকৃত। তিনি যে চিঠি দিয়েছেন, সেটা আমরা সামনে আনব না। কারণ সেটা গোপনীয়। আমরা বলতে চাই যে সিবিআইয়ের জন্য এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।' এদিকে সিবিআই যে স্টেটাস রিপোর্ট গতকাল আদালতে পেশ করেছে, তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি বিচারপতিরা। তবে এই বিষয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেছেন, 'সিবিআই কী তদন্ত করছে, সেটা যদি আজই সামনে আনা হয়, তাহলে পুরো প্রক্রিয়াটা ঘেঁটে যাবে। সত্যের উদঘাটনের জন্য সিবিআই যে পন্থা নিয়েছে, সেটা ঘেঁটে যাবে। টালা থানার তৎকালীন ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা সিবিআইয়ের স্টেটাস রিপোর্ট দেখেছি। আমরা যে যে বিষয়গুলির উত্থাপন করেছিলাম, সেটার জবাব দিয়েছে সিবিআই। চালান দেওয়া হয়েছিল কিনা, ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া কীরকম ছিল, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে কিনা - সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সিবিআই। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য হাতে এখনও সময় আছে। সিবিআইকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে আমাদের। ওরা ঘুমোচ্ছে না। সত্য উদঘাটনের জন্য ওদের সময় দিতে হবে।'