ইদানিং আদালত থেকে ফেরার পথে মুখ খুলছিল আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়। প্রথমদিকে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করছিল সে। সোমবার আবার তার মুখে শোনা যায় কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নাম। আর মঙ্গলবার দেখা গেল সঞ্জয়কে যখন আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে তখন একেবারে নজিরবিহীন ঘেরাটোপে। কার্যত প্রাথমিকভাবে বোঝাই গেল না তাকে কোন গাড়িতে নিয়ে আসা হল শিয়ালদা আদালতে। তবে পরবর্তীতে জানা যায় কালো কাঁচ দিয়ে ঘেরা একটি গাড়িতে তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল। এমনকী রাস্তায় গ্রিন করিডর করা হয় বলেও খবর।
এখানেই প্রশ্ন কেন সঞ্জয় রায়কে এভাবে ঢাকা দিয়ে আনা হল? তবে কি সঞ্জয় রায় যাতে মুখ খুলতে না পারে সেকারণেই কি এই ব্যবস্থা?
কার্যত পুলিশের তরফে জানতেই দেওয়া হল না কোন পাঁচটি গাড়ির মধ্য়ে সঞ্জয় রায় রয়েছে। একটা প্রিজন ভ্য়ান ছিল সেই কনভয়ের মধ্যে। আর সেই কনভয়ের মধ্য়ে কালো কাঁচ দিয়ে ঘেরা দুটি গাড়ি ছিল। সেই গাড়ির মধ্যে একটি গাড়িতে নিয়ে আসা হয় সঞ্জয় রায়কে। সূত্রের খবর এমনটাই। শিয়ালদা আদালতে সঞ্জয়কে নিয়ে আসা হল একেবারে বেনজির ঘেরাটোপে। সেক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যম কার্যত বুঝতেই পারেনি যে কোন গাড়িতে সঞ্জয়কে নিয়ে আসা হচ্ছে। সাধারণ মানুষও বুঝতে পারেননি কোন গাড়িতে রয়েছে সঞ্জয় রায়। তবে তার স্পষ্ট কারণ জানানো হয়নি।
এদিকে সোমবার প্রিজন ভ্যানের জানালা থেকে ফের চিৎকার করছিল সঞ্জয়। বার বার সে চিৎকার করে বলছিল, আমি নাম বলে দিচ্ছি বিনীত গোয়েল ডিসি স্পেশাল, ওনারা সাজিশ করে আমায় ফাঁসিয়েছে।
তার আগে সঞ্জয় প্রিজন ভ্যানের জানালা থেকে বলেছিল, ‘আমি কিন্তু রেপ আর মার্ডার করিনি। আমায় নীচে নামিয়ে দিল। আমার কথা শুনছে না। পুরো সরকার আমায় ফাঁসাচ্ছে। আমি এতদিন চুপ ছিলাম। আমায় সব জায়গায় ভয় দেখাচ্ছে তুমি কিছু বলবে না, তুমি কিছু বলবে না। এমনকী ডিপার্টমেন্ট আমায় ভয় দেখিয়েছে…আমি পুরোপুরি নির্দোষ। আমায় ফাঁসানো হয়েছে।’
তবে সোমবার সঞ্জয় যেভাবে পুলিশকর্তাদের নাম নিচ্ছিল তাতেই শোরগোল পড়ে যায়। আর বুধবার যখন সেই সঞ্জয়কে আনা হল শিয়ালদা আদালতে, কার্যত প্রাথমিকভাবে কাকপক্ষী টের পায়নি কোন গাড়িতে রয়েছে সঞ্জয়।
যাতে গলার স্বর বাইরে প্রকাশ না পায় সেকারণে কালো কাঁচ ঘেরা গাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিল। দাবি কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, সঞ্জয় রায়ের যদি কিছু বলার থাকে সেটা কোর্টের মধ্য়ে বলতে পারে। কলকাতা পুলিশ জানে সে করেছে, সিবিআই জানে সে করেছে আর সঞ্জয় রায় জানে সে করেছে। একজন ফাঁসির আসামি…।