নিজের ঘর থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক পড়ুয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হল। প্রাথমিক সূত্রে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটিতে মায়ের ইএসআই হাসপাতালের কোয়ার্টারে থাকতেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের এমবিবিএসের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী (২০)। সেই কোয়ার্টার থেকেই শুক্রবার রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুুলিশের প্রাথমিকভাবে অনুমান, ডিপ্রেশন বা অবসাদে ভুগছিলেন তরুণী। তার জেরে আত্মহত্যা করতে পারেন। যদিও তাঁর ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অস্বাাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত করছে পুলিশ।
বারবার ফোন করেও যুবতীর ফোনে পাচ্ছিলেন মা
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যুবতীর মা চিকিৎসক। কামারহাটির ইএসআই হাসপাতাল কর্মরত আছেন। আর যুবতীর বাবা মুম্বইয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উচ্চপদস্থ কর্তা। শুক্রবার ইএসআই হাসপাতালের কোয়ার্টারে নিজের ঘরে একা ছিলেন যুবতী। তাঁকে বারবার ফোন করছিলেন মা। কিন্তু ফোন ধরেননি যুবতী। মেলেনি কোনও সাড়াশব্দ। সেই পরিস্থিতিতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন মা। মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান মেয়েকে। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
মেডিক্যাল কলেজে ‘চুপচাপ থাকতেন' যুবতী
হাসপাতাল সূত্রে খবর, যুবতী এমনিতে চুপচাপ স্বভাবের ছিলেন। বেশি কথা বলতেন না। চুপচাপ থাকতেন। আর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করার মৃতদেহ পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কয়েক মাস আগেই আরজি কর হাসপাতালে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে
আর এমন একটা সময় ওই যুবতীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার কয়েক মাস আগেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের এক চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। তার জেরে রাজ্য উত্তাল হয়ে উঠেছিল। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যে কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দণ্ডিত করা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ।
যদিও সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে সিবিআই ও রাজ্য সরকার। নির্যাতিতা চিকিৎসকের পরিবার অবশ্য আপাতত সঞ্জয়ের ফাঁসি চায়নি। পরিবারের দাবি, মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত আছেন। আর তাঁরা বহাল তবিয়তে এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সেইসঙ্গে তথ্যপ্রমাণ লোপাটেরও অভিযোগ তোলেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা-মা।