জুনিয়র ডাক্তারদের টানা ৪১ দিনের কর্মবিরতি দেখেছে বাংলার মানুষ। দুর্ভোগ চরমে উঠেছিল রোগী এবং তাঁদের পরিবারের। এখন কর্মবিরতি উঠে গিয়েছে। দুর্গাপুজোর আবহে তা আবার শুরু হতে পারে বলে সূত্রের খবর। কর্মবিরতি যখন চলছিল তখন আরজি কর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা হয় একজন রোগীর পায়ে। তার জেরে ওই যুবকের পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। সেই কাটা পায়ের এবার ময়নাতদন্ত হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। সুতরাং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সামনে আসলেই কাঠগড়ায় উঠতে পারেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই যুবকের বাড়ি সোদপুরে বলে দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ।
আবার একটা কর্মবিরতি করার খসড়া তৈরি করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই আবহে কুণাল ঘোষের দাবি, কদিন আগেই সিঁথির মোড়ে পথ দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন ওই যুবক। তাতে তাঁর পায়ে গুরুতর আঘাত লাগে। কাশীপুর থানার পুলিশ ওই যুবককে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করেছিল। কিন্তু আরজি কর হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা করা হয়েছে বলে কুণাল ঘোষের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘আরজি কর হাসপাতালে তখন কর্মবিরতি চলছিল। দায়সারাভাবে ওই যুবকের পায়ে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়। আর বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দু’দিন পর তাঁর পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা হতে শুরু করে। এই অবস্থায় যখন যুবকটি ছটফট করছে তখন তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
আরও পড়ুন: হাইভোল্টেজ বিদ্যুৎ টাওয়ারে চড়লেন যুবক, আলিপুরদুয়ারে হুলুস্থুল কাণ্ড, নেপথ্যে কারণ কী?
যুবকের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ততটা ভাল নয়। তবু কষ্ট করে ওই যুবককে চিকিৎসা করানোর জন্য এবং যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেওয়ার আশায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওখানে চিকিৎসক যুবকের পায়ের অবস্থা দেখে বেগতিক বোঝেন। তাই পায়ের প্লাস্টার কেটে দেন। আর প্লাস্টার কাটতেই দেখা যায় যুবকের পায়ে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। কুণাল ঘোষের অভিযোগ, ‘চিকিৎসকরা পরিস্থিতি দেখে পরামর্শ দেন, পা কেটে বাদ দিতে হবে। তারপরই দু’দিন আগে ওই যুবকের পা কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে।’ এই ঘটনায় ওই যুবক কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
যে পায়ে প্লাস্টার ঠিক করে করলে এমন সমস্যাই দেখা দিত না সেখানে পা–টাই বাদ দিতে হল। তাই কুণাল ঘোষের কথায়, ‘কোন চিকিৎসকের এমন ভুলে যুবকের পা কেটে বাদ দিতে হলো, তাঁর পরিচয় সামনে আনা হোক। এবার জাস্টিস কে দেবে?’ যে বেসরকারি হাসপাতালে যুবকের পা বাদ দিতে হয়েছে সেটা ফুলবাগান থানার অন্তর্গত। ফুলবাগান থানাই এসএসকেএম হাসপাতালে এই কাটা পায়ের ময়নাতদন্ত করার জন্য পাঠিয়েছিল। আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই গাফিলতির বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র ডাক্তারের বক্তব্য, ‘সিনিয়র ডাক্তাররা সবাই চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন। কর্মবিরতির জেরেই এমন ঘটনা ঘটেছে, কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়া অভিযোগ করা ঠিক নয়।’