আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং পুলিশের ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। আজ, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সুতরাং বাংলার সরকার বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে। পুলিশের কৃতিত্ব বলতে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করার ঘটনা। এই আবহে এবার আজ, বৃহস্পতিবার ধৃত সঞ্জয় রায়ের তথ্য ফাঁস হল। সূত্রের খবর, এই সঞ্জয় রায় অপরাধের আগের দিন তরুণী চিকিৎসককে ভাল করে দেখে যায়। কড়া নজর যে সে রেখেছিল কলকাতা পুলিশের জেরায় স্বীকার করেছে সঞ্জয়। সিসিটিভি ফুটেজে সেই ছবি ধরা পড়েছে। গত ৮ অগস্ট বেলা ১১টা নাগাদ চেস্ট মেডিসিন ওয়ার্ডে আসে সঞ্জয়। তখন নির্যাতিতা চিকিত্সক এবং চার জুনিয়র ডাক্তার ওই ওয়ার্ডেই ছিল।
আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে যখন চর্চা তঙ্গে উঠেছে তখন সিবিআইয়ের দুয়ারে বারবার হাজির হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। তাঁকে আজও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এই আবহে সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আরজি কর হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক পড়ুয়াকেও শিয়ালদা আদালতে নিয়ে যায় সিবিআই। তাঁদেরও পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত সেটারও অনুমতি দিয়েছে। তবে রাত ৩টে নাগাদ আরজি কর হাসপাতালের দোতলা, তিনতলার করিডর এবং চেস্ট ডিপার্টমেন্টের কাছে সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয়কে দেখা গিয়েছে। সেমিনার হলের সামনের দিকে লিফট থেকে উঠে যে করিডর, সেখানেও ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় সঞ্জয়কে। ৩টে পর থেকে সিসিটিভি ফুটেজে ৪৫ মিনিট পর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে সেমিনার হল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে আল–কায়দা মডিউলের সন্ধান, ১৪ সন্দেহভাজন গ্রেফতার, তিন রাজ্যে চলে অপারেশন
তবে আজকে নিয়ে টানা সপ্তম দিন সন্দীপ ঘোষ হাজিরা দিলেন সিবিআই দফতরে। এখন সন্দীপ ঘোষ স্বাস্থ্য ভবনের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি পদে রয়েছেন। আজ ধৃত সঞ্জয়ের সাইকোমেট্রিক টেস্ট হয়। সেখানে হাড়হিম করা তথ্য মিলেছে। পশুর মতো হিংস্র হয়ে উঠেছিল সঞ্জয় বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় বিকৃত যৌনতায় আক্রান্ত বলে জানা যাচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান থেকে অপরাধ বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটাকে হয়, সেক্সুয়ালি পারভারটেড। সিবিআই যখন সঞ্জয়কে জেরা করেছিল তখন সে ভাবলেশহীন অবস্থায় ছিল।
ইতিমধ্যেই সিবিআই সন্দীপ ঘোষ এবং চার জুনিয়র ডাক্তারদের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করা নিয়ে আবেদন জানায় সিবিআই। আজ আবার আন্দোলনরত চিকিৎসকদের কাজে ফিরতে অনুরোধ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। মৃত তরুণী চিকিত্সকের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অনেক তথ্য উঠে এসেছে। এমনকী নির্যাতিতার শরীরে ২৫টির বেশি গভীর ক্ষত রয়েছে বলে তুলে ধরা হয়েছে। নির্যাতিতার মাথা, মুখ, ঠোঁট, চোখ, ঘাড়, হাত এবং যৌনাঙ্গে গভীর ক্ষতের কথা লেখা রয়েছে রিপোর্টে।