আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগে এখন প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব রাজনৈতিক দলই পথে নেমেছে। ফাঁসির দাবি, বিচার চাই এবং উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান শোনা যাচ্ছে সকলের মুখে। এবার এই আবহে গ্রেফতার হওয়া সঞ্জয় রায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে জেলের ভিতরে। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়ই বলে দাবি কলকাতা পুলিশের। তারপর সিবিআইয়ের হাতে যায় মামলা। প্রেসিডেন্সি জেলে প্রথমদিন নিশ্চিন্তে ঘুমোতে চেয়েছিলেন। এবার খাদ্য তালিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিল ধৃত সঞ্জয় বলে জেল সূত্রে খবর।
জেলের সকল বন্দিদের জন্যই একইরকম খাবার রান্না হয়ে থাকে। কিন্তু সেই খাবার মুখে রোচ্ছে না সঞ্জয় রায়ের। এবার তা নিয়ে জেলের ভিতরেই ক্ষোভ প্রকাশ করল ধর্ষণ–খুনে অভিযুক্ত। বৃহস্পতিবার রাতে সঞ্জয়ের সেলের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এক কারারক্ষী। তখন সঞ্জয় প্রশ্ন করে তাঁকে, ‘আজ রাতে খাবার কী আছে?’ জবাব দেন ওই কারারক্ষী। স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, রুটি–সবজি। তা শুনেই ক্ষোভ উগরে দেন আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় ধৃত সিভিক সঞ্জয় রায়। সেলের ভিতর থেকে বলতে থাকে সঞ্জয়, ‘রোজ এক খাবার খেতে ভাল লাগে না। একটু স্বাদ বদলাতে তো হবে। বেশি কিছু চাইছি না। আজ রাতের খাবারে এগ চাউমিন চাইছি। সঙ্গে স্যালাড।’ সঞ্জয়ের এই কথায় কান না দেওয়ায় আরও চটে যায় সঞ্জয় বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: যুবক রাহুলের খোঁজ না পেয়ে উৎকণ্ঠায় পরিবার, বঙ্গোপসাগরে জাহাজডুবির পরই নিখোঁজ
এরপর যথারীতি রাতে হাজির হয় রুটি–সবজি। যা দেখে মুখ ঘুরিয়ে নেয় সঞ্জয়। কিন্তু তাতে কারারক্ষী বিশেষ পাত্তা দেননি। জেল সূত্রে খবর, ওই খাবার দেখেই থালা ঠেলে সরিয়ে দেয় সঞ্জয়। আর কারারক্ষীকে বলে, ‘এই খাবার কি খাওয়া যায়? মোটা রুটি আর একই তরকারি। এই খাবার খেতে ভাল লাগে। এগ চাউমিন খাব বলে একটু আর্জি জানিয়ে ছিলাম। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনল না।’ তখন পাল্টা জেলকর্মীরা বলেন, ‘আমাদের কাছে সব বন্দিই সমান। তাই সবাই যা খাবার খাবে, আপনাকেও সেটাই খেতে হবে। আপনি কোনও লাটসাহেব নন।’ এই কথা শুনে শেষমেশ রুটি–সবজিই খেয়ে নেয় সঞ্জয়।
রাতের খাওয়া সেরে সেলের ভিতরেই পায়চারি করতে থাকে সঞ্জয় রায়। এখন খবরের প্রথমে চর্চিত এই সঞ্জয়। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ–খুনের অভিযোগ রয়েছে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে। কলকাতা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলেও পরে সিবিআই হেফাজতে যায় সে। দফায় দফায় জেরা করা হয় সঞ্জয় রায়কে। তারপর আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে যায় সঞ্জয়। প্রথমদিন নিশ্চিন্তে ঘুমোনোর আবদার করেছিল সঞ্জয়। অনেকদিন সে ঘুমাতে পারেনি বলে কারারক্ষীদের জানায় সে। এবার খাবার নিয়ে জটিলতা শুরু করেছে সঞ্জয় বলে জেল সূত্রে খবর। ‘বর্তমান’ পত্রিকা থেকে এই তথ্য নেওয়া হয়েছে।