আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। আর এই অপরাধের সঙ্গে নাম জড়িয়ে যায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। আগে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা চিকিৎসকের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ ওঠে। কিন্তু এই সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়েও সঞ্জয় রায় নিজেকে ‘বড় খেলোয়ার’ বলে পরিচয় দিত। তিন মাস আগেও মহিলা চিকিৎসক এবং ডাক্তারি পড়ুয়াদের শ্লীলতাহানি, যৌন হেনস্তা করেছিল বলে অভিযোগ আছে। তারপরও তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা করা হয়নি বলে অভিযোগ হাতে পেয়েছে সিবিআই। মদত দিত কারা? উত্তর খুঁজছে সিবিআই।
এই অপরাধ করার অভিযোগে এখন সিবিআইয়ের হাতে আছে সঞ্জয় রায়। তাকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। কিন্তু এখনও তল খুঁজে পায়নি সিবিআই। একসপ্তাহ অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। সিবিআই অফিসাররা কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। এমনকী তদন্তে নতুন কোনও মোড় এসেছে তাও প্রকাশ্যে আনতে পারেননি। এমন অবস্থায় চাপ বাড়তে শুরু করেছে সিবিআইয়ের উপর। একদিকে রাজনৈতিক চাপ, অপরদিকে বাংলার জনগণের চাপ। তাই ধৃত সঞ্জয় রায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা বা লাই ডিটেক্টর টেস্ট করা হবে। সঞ্জয়ের এই কীর্তির কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তথা প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে জানানো হয়। লালবাজারও ঘটনাটি জানতে পারে। কিন্তু তারপরও সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে তথ্য পেয়েছেন সিবিআই অফিসাররা। যা ভাবিয়ে তুলেছে সিবিআই অফিসারদের।
আরও পড়ুন: ‘ওর ফাঁসি হওয়া উচিত’, এবার আরজি কর কাণ্ডে বড় দাবি করলেন ধৃত সঞ্জয়ের দিদি
জনরোষ তৈরি হচ্ছে সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে। এই আবহে এবার বোমা ফাটালেন ধৃতের দিদি। রাখিবন্ধনের দিন তিনি ভাই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন। এই ঘটনার কথা তার দিদি সংবাদমাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জেনেছেন প্রথম। তারপর গোটা রাজ্যের মানুষের মুখে মুখে চর্চা হয়েছে তাঁর ভাইয়ের নাম। এবার সঞ্জয়ের দিদি বলেন, ‘যদি ভাই দোষ স্বীকার করে থাকে তাহলে ওর ফাঁসি হওয়া উচিত। ওর চারটে বিয়ে আমি জানতাম না। সংবাদমাধ্যম থেকে তা জানতে পেরেছি।’ গত কয়েক মাস ধরেই হাসপাতালে সঞ্জয় রায়ের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। অধিকারংশ রাতেই সে প্রচণ্ড মদ্যপান করে আরজি কর হাসপাতালে প্রবেশ করত। ইচ্ছামতো ঘোরাঘুরি করত হাসপাতালে বলে সূত্রের খবর।
এছাড়া অপরাধীর ফাঁসি চেয়ে পথে নামেন খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইকে ডেডলাইন বেঁধে দেন। অপরাধীকে ধরে তার ফাঁসির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। সেখানে সিবিআই এখনও তেমন কিছু করতে পারেনি। সঞ্জয় রায়ের এতটাই সাহস বেড়ে গিয়েছিল যে, সে রাস্তায় নানা সময়ে মহিলাদের শ্লীলতাহানি ও হেনস্তা করত। কিন্তু তার পরও ওর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ হয়নি। ধর্ষণ–খুনের ঘটনার দিন বিকেলে দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অঞ্চলেও সঞ্জয় এক মহিলার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। তার পিছনে কারা মদত জোগাত সেটা জানার চেষ্টা করছে সিবিআই। আগামী ২৩ অগস্ট আদালতে তোলা হবে ধৃত সঞ্জয় রায়কে। তখন সিবিআই আদালতে দাঁড়িয়ে কি জানায় সেটাই দেখার।