আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলনে নেমেছেন। বিচারের দাবি তুলেছেন। স্লোগান উঠেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। তার মধ্যেই ধর্মতলায় চলছে বিজেপির ধরনা। এই ইস্যুতেই ধরনা চলছে। যেখানে একের পর এক বিজেপি নেতারা এসে ঝাঁঝালো বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু এই ধরনা রাত পোহালেই শেষ হয়ে যাবে। তারপর কী কর্মসূচি নেবে বঙ্গ–বিজেপি? এই প্রশ্নে এখন ধন্দ তৈরি হয়েছে। কারণ আরজি কর হাসপাতাল ইস্যুতে বিজেপি নিজেদের পালে হাওয়া টানতে পারেনি। তাই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের মঞ্চে গিয়ে গো ব্যাক স্লোগান শুনতে হয়েছিল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে অগ্নিমিত্রা পালকে। সুতরাং ভাবনার মেঘ দেখা দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় বিচার চেয়ে প্রায় ৩৫ দিন ধরে আন্দোলন করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে এখনও জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বৈঠক হয়নি। যার জেরে এখনও রফাসূত্র বের হয়নি। এমন আবহে ২০২৬ সাল পর্যন্ত ইস্যুকে জিইয়ে রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির। সেক্ষেত্রে লাগাতার নতুন নতুন কর্মসূচি দরকার। শুধু ধর্মতলায় ধরনায় বসে থাকলে হবে না। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হবে। এমন ভাবনাই এখন তাঁদের। সূত্রের খবর, পরের রণকৌশল ঠিক করতে দ্রুত বৈঠকে বসতে চলেছেন বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। এই বিষয়ে দলের এক প্রবীণ নেতা বলেন, ‘আমাদের এখন মূল লক্ষ্য এই আন্দোলন যাতে কোনওভাবে বামেদের হাতে না যায় সেটা সুনিশ্চিত করা।’
আরও পড়ুন: খুন হওয়া দলীয় কর্মীকে শহিদের মর্যাদা দিলেন মানিক ভট্টাচার্য, জামিন পেয়েই নতুন মেজাজে
ইতিমধ্যেই সিপিএম নেতারা অনেক চেষ্টা করেও কলতান দাশগুপ্তর কৃতকর্মকে ঢাকা দিতে পারছেন না। কিন্তু পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি বিজেপি নেতারা। বরং সল্টলেকে স্বাস্থ্যভবন লাগোয়া বিজেপির রাজ্য দফতরের বাইরেও বাম কর্মীরা নিজেদের দলের স্লোগান লিখে দিয়েছেন বলে শনিবার অভিযোগ করেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। তার উপর ধর্মতলার মঞ্চে এখন আর ভিড় হচ্ছে না। বামেরা বরং এই সুযোগে সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা করছে। এই খবর পেয়েছেন বিজেপি নেতারাও।
শনিবারই স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আন্দোলন তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নয়, দিদি হিসেবে এসেছেন তিনি। তাতে রফাসূত্র হয়তো বের হয়নি। কিন্তু একটা বড় অংশের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণে মুগ্ধ। সেটা নেটপাড়ায় চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এতকিছুর পরও বিজেপি তেমন কোনও ফসল ঘরে তুলতে পারেনি বলেই খবর। এই বিষয়ে বিজেপির উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ বলেন, ‘১৬ তারিখ ধর্মতলায় আমাদের ধরনা কর্মসূচি শেষ হচ্ছে। ওই দিনই দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মঞ্চ থেকে আরজি কর হাসপাতালের ইস্যুতে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। আমরা কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রালের অফিস ঘেরাও করেছি। এরপর টালা থানাও ঘেরাও করব।’