আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তার জেরে কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়ে উঠেছে। এখন নানা মিছিল, ধরনা জারি আছে। সঙ্গে উঠেছে স্লোগান–উই ওয়ান্ট জাস্টিস। আর এই আবহে দুর্গাপুজোর সময়ও জনগণের মননে এই ঘটনা জিইয়ে রাখতে পরিকল্পনা করছে বিজেপি। সোমবার রাতে বৈঠকে বসেন বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতারা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দলের আন্দোলন শুধু কলকাতা কেন্দ্রিক করলে চলবে না। বরং তা ছড়িয়ে দিতে হবে গোটা রাজ্যে। এই নিয়ে কর্মসূচি তৈরি করা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
এদিকে আরজি কর হাসপাতাল নিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি আছে। সেখানে কেমন সিদ্ধান্ত হয় সেটা দেখে গোটা কর্মসূচি সাজানো হবে বলে ঠিক করেছে গেরুয়া শিবির। সল্টলেকের রাজ্য দফতরে এই বৈঠক হয় গতকাল। সেখানে ঠিক হয়েছে, কলকাতায় দুর্গাপুজোর সময় আন্দোলন হবে। তার সঙ্গে প্রত্যেকটি জেলায় আরজি কর হাসপাতালের ইস্যুতে আন্দোলন হবে। বিজেপির রাজ্য নেতারা এবং সব মোর্চার প্রধানরা বসে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এখন সবাইকে উৎসবে ফিরে আসার আহ্বান করেছেন। সেখানে উৎসবের মরশুমেই বিজেপি আন্দোলন করার সিদ্দান্ত নিয়েছে।
আরও পড়ুন: আর্থিক তছরুপ মামলায় সুকন্যার জামিন, তিহাড় জেল থেকে কি মুক্তি পাবেন অনুব্রত কন্যা?
অন্যদিকে আর এই আন্দোলন তথা পথসভা রেলস্টেশন, বড় বাসস্ট্যান্ড এবং বাজার এলাকায় করা হবে। বিজেপি এই পথসভা থেকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু উৎসবের মরশুমে এসব কথা শুনবে কে? উঠছে প্রশ্ন। তবে বিষয়টি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর সময় এমন পথসভা বা আন্দোলন সংগঠিত করলে যানজটের সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই সব সভায় দুর্গাপুজোর সময় রাজ্য নেতারা না গেলে স্থানীয় সাংসদ, স্থানীয় বিধায়করা যাবেন বলে ঠিক হয়েছে। একই সঙ্গে জেলার নেতারা প্রত্যেকদিন কোনও না কোনও সভায় হাজির থাকবেন বলে খবর।
আর এখন কলকাতার ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে ধরনা চলছে। যা চলবে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। পরদিন বিশ্বকর্মা পুজো। সেদিন সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিনও রয়েছে। প্রত্যেক বছর নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে বিজেপি নানা সেবামূলক কর্মসূচি নেয়। কিন্তু এবার আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা নিয়েই থাকতে চায় বঙ্গ–বিজেপি। ছুটি বাতিল আগেই হয়েছিল। এবার কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। এই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘দুর্গাপুজো তো হবেই। কিন্তু সাধারণ মানুষ কি এবার উৎসবের মুডে থাকবেন? মুখ্যমন্ত্রী চাইলেও হবে না। একটা কথা এখানে বলতে চাই, চিকিৎসক বোনকে হারানোর পর বিজেপি আনন্দে থাকার অবস্থায় নেই।’