আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় তোলপাড় রাজ্যের রাজপথগুলি। প্রতিবাদ–আন্দোলন–ধরনা–স্লোগান থেকে উই ওয়ান্ট জাস্টিসের দাবি। এই সবই দেখছে বাংলার মানুষ। এবার একটা নতুন বিষয় দেখা গেল। সেটি হল—রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা একে অপরের পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিধানসভার ভিতরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন বিল পাঠের সময় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। আর বিরোধী দলনেতা একই দাবি করেছেন এক্স হ্যান্ডেলে। ফলে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে এমন ঘটনা আকছাড় ঘটছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তখন আন্দোলন–প্রতিবাদ কেন করেন না? প্রশ্নও তোলেন তিনি। বেশ কয়েকটি ঘটনার কথা তুলেও ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী মহিলা চিকিৎসকদের রাতে কাজ করার বিষয়ে বিশেষ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটাকেই ঘুরিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন। বিরোধী দলনেতা লেখেন, ‘পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি পদত্যাগ করুন। কারণ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে আপনি স্বীকার করেছেন বাংলায় রাতে কর্মরত মহিলারা সুরক্ষিত নয়।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন আনার পক্ষে সওয়াল করেন। এই বিল রাজ্যপালের কাছে পাঠাবেন। আর তা সই করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে গেলেই ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় যুক্ত হয়ে যাবে সংশোধনী বিল। এই কথা বলেছেন তিনি। তখন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘মহিলা চিকিৎসক–নার্স ১২ ঘণ্টার বেশি যেন ডিউটি না করেন। আর যদি তাঁদের ডিউটির সময় বৃদ্ধির বিষয়টি দেখতে হবে চিকিৎসকদের। সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি, পৃথক বিশ্রাম কক্ষ–সহ নানা বিষয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া রাত্রি সাথী প্রকল্প করা হয়েছে। যাতে রাতে মহিলারা নিরাপত্তার সুযোগ পান।’ আর এক্স হ্যান্ডেলে পাল্টা বিরোধী দলনেতা লেখেন, ‘আপনার মুখ্য পরামর্শদাতা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই এই কথা ঘোষণা করেছিলেন নবান্ন থেকে। আপনি আজ স্বীকার করলেন মহিলাদের রাতের ডিউটি কাটছাটের কথা। কারণ রাতের বেলায় কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে আপনার সরকার ব্যর্থ।’
আরও পড়ুন: ‘আমার বাংলায় সুরক্ষিত প্রতিটা স্লোগান, রাত জাগা’, বিজেপিকে নিশানা করে পোস্ট দেবাংশুর
তবে আজ, বুধবারও রাতেও এক ঘণ্টা মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ করা হবে। বাড়ির আলো নিভিয়ে দেওয়ার আহ্বান করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বাংলার নাগরিক সমাজ রাত জেগেছে এই ঘটনায়। এই আবহে শুভেন্দু অধিকারী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘রাতে মহিলা রোগীদের কারা দেখবেন? তাদের নিরাপত্তার কী হবে? এই সমস্যার একমাত্র সমাধান হল আপনি পদত্যাগ করুন এবং একজন দক্ষ প্রশাসকের জন্য পথ তৈরি করুন।’