আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এখন এই নারকীয় ঘটনার বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস শহর থেকে জেলায় সর্বত্র অপরাধীর শাস্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। কিন্তু বিজেপির অন্দরে অনেকের মত, এই আন্দোলনে বিজেপি উদ্যোগী হতে পারেনি। আর যেটুকু তাঁরা করতে পেরেছেন তাতে জনমানসে কোনও প্রভাব ফেলেনি। এবার বিজেপি নেতারা এই আন্দোলন চরমে তুলতে পথে নামতে চলেছেন।
এই ঘটনার পর গর্জে উঠেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি ‘এনকাউন্টার’ করার নিদান দিয়েছিলেন তিনি। তারপর যখন আরজি কর হাসপাতাল ভাঙচুর হয় তখন এক্স হ্যান্ডেলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। আর কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। এটা দেখে বাংলার জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাই হাওয়া যাতে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে চলে না যায় তাই বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘আন্দোলন এখন পর্যন্ত যা হয়েছে সেটা সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ। বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলই তার নেতৃত্ব নিজের হাতে নিতে পারেননি। এবার নিজেদের পালে হাওয়া টানার চেষ্টা আমাদের করতেই হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলায় পিছিয়ে গেল বিজেপির সদস্যসংগ্রহ অভিযান, নেপথ্যে ঠিক কী কারণ রয়েছে?
এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চুপচাপই দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কেন? কারণ এই ঘটনায় প্রচণ্ড রেগে গিয়েছেন অভিষেক। তাঁর নিজেরও কন্যাসন্তান আছে। তাই এই নারকীয় ঘটনা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। রেগে গিয়েই মুখ থেকে এনকাউন্টার করার কথা বলেছিলেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে রাস্তায় নেমেছিলেন। দোষীর ফাঁসি চাই স্লোগান তুলেছিলেন। এবার নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চাইছে বিজেপি। তাই একগুচ্ছ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, আরজি কর ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি জোরালো করতে চলেছেন তাঁরা।
যদিও পাঁচদিন হয়ে গেলেও সিবিআই তদন্ত এখন প্রশ্নের মুখে। কারণ কোনও গ্রেফতার হয়নি। বড় কোনও তথ্যপ্রমাণও সামনে নিয়ে আসতে পারেনি তদন্তকারীরা। এতে এখন পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। তাই আগেই বিজেপি নিজেদের সদস্যসংগ্রহ অভিযান পিছনের দিকে ঠেলে দিয়ে আরজি কর হাসপাতালের ইস্যুতে আন্দোলন করে পালে হাওয়া টানতে চাইছে। এই বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আগামী ২০ অগস্ট থেকে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ধরনায় বসছি আমরা। সোমবার আদালতে অনুমতি চাইব। আগামী ২৩ তারিখ পর্যন্ত এই ধরনা চলবে। আর ২২ তারিখ স্বাস্থ্যভবন ঘেরাও করব।’