আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। তারপর থেকে লাগাতার আন্দোলন চলেছে বাংলায়। বারবার অভিযোগ উঠেছে তৎকালিন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির অভিযোগ সন্দীপ ঘোষকে প্রথমে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর এই গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার পিছনে তাঁর হাত আছে বলে তথ্য পায় সিবিআই। আর সেই মামলাতে যুক্ত করা হয় সন্দীপ ঘোষকে। এই ঘটনা নিয়ে সিবিআইয়ের হাতে এসেছে মুছে ফেলা একাধিক ফোন কল রেকর্ডিং বলে সূত্রের খবর। সন্দীপ ঘোষ এবং প্রাক্তন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের একাধিক ফোন কল রেকর্ডিং মিলছিল না। তথ্য গোপন করতেই অভিজিৎ মণ্ডলের ফোন থেকে সেসব মুছে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি সিবিআইয়ের।
সিবিআই সূত্রে খবর, আরজি কর হাসপাতালে ওই ঘটনার দিন এবং পরেরদিন একাধিক সিসিটিভি ফুটেজও মিলেছে। যেখান থেকে গোটা তদন্তের মোড় ঘুরে যেতে পারে। আর এই সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের বিষয় মিলেছে সেগুলি চার্জশিটে এখন উল্লেখ করা হচ্ছে। এক, এরা একে অপরকে চিনতেন। দুই, ফোনে কথা বলেই তথ্য লোপাট করা হয়। তিন, ৯ অগস্ট দু’জনের মধ্যে একাধিকবার টেলিফোনে কথাবার্তা হয়। চার, ওই টেলিফোনের কথোপকথনের একাধিক রেকর্ডিং মুছে ফেলাও হয়।
আরও পড়ুন: ‘জামা খুলে নাচতে হবে’, অশ্লীল প্রস্তাবে নৃত্যশিল্পী রাজি না হওয়ায় বেধড়ক মার নন্দকুমারে
সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলের আইনজীবী বারবার শিয়ালদা আদালতে দাবি করে যাচ্ছেন, তাঁদের মক্কেলকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি। এবার তা তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। তাই সিবিআই অফিসারদের দাবি, অভিজিৎ মণ্ডলের ফোনে অটো কল রেকর্ডিং মোড অন থাকায় সমস্ত কল রেকর্ডিং হয়। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক হত্যার দিন প্রাক্তন ওসিকে বারবার নানা নির্দেশ দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। আর সেসব কথোপকথন মুছে ফেলা হয়েছিল ফোন থেকে। ফরেনসিক পরীক্ষার সাহায্যে সেই সব মুছে ফেলা কথোপকথন ফিরে পেয়েছে সিবিআই। তথ্য গোপন করতেই সেসব মোছা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
এই দুই ব্যক্তির কথোপকথন থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের মোবাইল ফোনের সিএফএসএল রিপোর্টে বিশেষ তথ্য উঠে এসেছে সিবিআই অফিসারদের হাতে। এমনকী একাধিক কল রেকর্ডিং ও ভিডিয়ো মিলেছে দু’জনের মোবাইল থেকে। ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো রেকর্ডিংও মিলেছে বলে সূত্রের খবর। এই দু’জন মিলে গোটা ঘটনাকে চেপে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ সিবিআই গোয়েন্দাদের। টালা থানাতেই আসল ঘটনার তথ্য লোপাট করার চেষ্টা হয়েছিল বলে সিবিআই তথ্য পেয়েছে। এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবার এগোবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি।