আজ, বৃহস্পতিবার পাঁচ সদস্যের সিবিআই টিম আসে আরজি কর হাসপাতালের প্লাটিনাম জুবলি বিল্ডিংয়ের পাশের মর্গে। সূত্রের খবর, মৃতদেহ পাচার নিয়ে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। ইতিমধ্যেই সিবিআই একাধিকবার সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আজও চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। তাঁর বাড়িতে গিয়েও তল্লাশি চালানো হয়। সেখানে পাওয়া নথির ভিত্তিতেই খতিয়ে দেখতে এবার এই হানা। আর্থিক দুর্নীতির ঘটনায় আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে এলেন সিবিআই অফিসাররা। এখানের মৃতদেহ সংরক্ষণের বিভাগে এসে নানা বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। কথা বলেছেন ওই বিভাগের কর্মীদের সঙ্গেও।
এদিকে আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তায় আরও একধাপ এগোলো সিআইএসএফ। ইমারজেন্সি বিল্ডিং এবং ওপিডি বিল্ডিংয়ের দু’জায়গায় বসল ডিএফএমডি। এবার থেকে এই দুই বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করতে গেলে রোগী এবং তার আত্মীয়দের ডোর ফ্রেম মেটাল ডিটেক্টরের ভিতর দিয়েই প্রবেশ করতে হবে। আপাতত দুই জায়গায় এটা বসলেও অন্যান্য রোগী এবং আত্মীয়দের প্রবেশের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিভাগেও এভাবেই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে কেন্দ্রীয় বাহিনী বলে সূত্রের খবর। আজ সকালে একদিকে যখন সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। ঠিক তখনই অপরদিকে সিবিআইয়ের ওই দলটি পৌঁছে গেল আরজি কর হাসপাতালের মর্গে।
অন্যদিকে আর্থিক দুর্নীতির বেশ কিছু নথি পেয়েছে সিবিআই। তা খতিয়ে দেখতেই আজকের এই অভিযান। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করার ঘটনার পরে ১৫ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও চলছে সিবিআই তদন্ত। তবে সেখান থেকে এখনও এমন কোনও তথ্য সামনে আসেনি যাতে ‘জাস্টিস’ পাওয়া যায়। এই অবস্থায় আরও একবার নির্যাতিতার বাড়িতে বুধবার যায় সিবিআই। আর বৃহস্পতিবার এল হাসপাতালের মর্গে। সুতরাং সিবিআইয়ের উপর চাপ বাড়ছে। এই বিষয়ে আজ তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও চাপ বাড়ানো হয়েছে। দলের এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘৩৮৪ ঘণ্টা পার। বাংলা অপেক্ষা করছে আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে সিবিআইয়ের পদক্ষেপ। রাজনীতি ছেড়ে এই মর্মান্তিক ঘটনার বিচার চাই আমরা।’ তাই চাপ বাড়ল।
আরও পড়ুন: ‘দুশ্চিন্তায় ঘুমোতে পারছি না’, সার্জেন্ট দেবাশিসের চোখ নিয়ে আশঙ্কায় মা, উদ্যোগ মমতার
এছাড়া আরজি কর হাসপাতালের জৈব বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন সন্দীপ ঘনিষ্ঠ আরজি কর হাসপাতালের ফরেনসিকের শিক্ষক দেবাশিস সোমও। তাঁকেও সিজিও কমপ্লেক্সে এবং নিজাম প্যালেসে ডেকে একাধিকবার জেরা করেছে সিবিআই। এবার তথ্য যাচাই করতে মর্গে হানা দিয়েছেন গোয়েন্দারা বলে সিবিআই সূত্রে খবর। এই তদন্তের বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা দাবিকেও সমর্থন করেছেন নির্যাতিতার বাবা–মা। তদন্তে কেন এত সময় নিচ্ছে সিবিআই প্রশ্ন তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে সমর্থন করে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘অবশ্যই তিনি ঠিক বলছেন। আমরাও তো সেটাই বলছি সিবিআইকে। তাড়াতাড়ি বিহিত করুন। আপনাদের এত সুনাম। সাধারণ মানুষও সিবিআইকে চাপ দিক তাড়াতাড়ি তদন্ত শেষ করার জন্য।’