আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তারপরই এই হাসপাতালের দুর্নীতি সামনে এসেছে। এমনকী দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই আবহে আজ লালবাজার অভিযান করে সিপিএম। সেই অভিযান আটকে দেয় পুলিশ। ১৪ জন সিপিএম কর্মী–সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম। মুক্তি না দিলে লালবাজারের সামনেই ধরনা কর্মসূচি শুরু হবে বলেও বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
এদিকে লালবাজার অভিযান নিয়ে তুমুল অশান্তি দেখা দেয়। পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি। ব্যারিকেড টপকে ঢোকার চেষ্টা করে সিপিএমের কমরেডরা। আজ পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগ চেয়ে ধর্মতলায় লেলিন মূর্তি থেকে লালবাজার পর্যন্ত মিছিল করে সিপিএম। এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। মহম্মদ সেলিম, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, দীপ্সিতা ধর এবং মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। আরজি কর হাসপাতালে যে ঘটনা ঘটেছে তার পর একমাস কেটে গিয়েছে। জাস্টিস মেলেনি। ইতিমধ্যেই রাস্তায় উই ওয়ান্ট জাস্টিস স্লোগান তুলে প্রতিবাদ আন্দোলনে নেমে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ। এবার নামল সিপিএম।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের শুনানি শেষ হতেই আরজি কর হাসপাতালে সিবিআই, রিপোর্ট তৈরিতে তৎপরতা
অন্যদিকে লালবাজারে ঢোকার আগেই ৯ ফুট উঁচু ব্যারিকেড লাগিয়ে দেয় পুলিশ। তখন সিপিএম কর্মীরা ব্যারিকেডের উপরে উঠে হাতে লাল পতাকা নিয়ে স্লোগান দেয়। ব্যারিকেডের উপরে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে চলতে থাকে স্লোগান। ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করা হয়। পুলিশের গার্ডরেল ভেঙে দিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়। পুলিশ জলকামান, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে প্রস্তুত ছিল। ব্যারিকেডের সামনেই অবস্থানে বসেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ১৪ জন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তাঁদের যতক্ষণ না ছাড়া হবে, ততক্ষণ অবস্থান চলবে। যদিও কিছুক্ষণ পর পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।
কলকাতা পুলিশ লোহার বিশাল বড় ব্যারিকেড এনে রাস্তা আটকানো হয়। প্রচুর সংখ্যায় গার্ডরেল লাগানো হয় রাজপথে। আর কলকাতা পুলিশ মাথায় হেলমেট পরে, হাতে লাঠি নিয়ে তৈরি থাকে। সঙ্গে কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ছিল। এই অভিযান যুদ্ধং দেহি হয়ে ওঠে। এরপর বড় ব্যারিকেড টপকে সিপিএম কর্মীরা যেতে চেষ্টা করেন। মিছিল বেন্টিংক স্ট্রিটে পুলিশ আটকে দেয়। কিন্তু লালবাজারে পৌঁছে যান সিপিএম নেতৃত্ব। পুলিশ কমিশনার অপসারণের দাবি–সহ পোস্টার লালবাজারের দেওয়ালে সেঁটে দেওয়া হয়। এখান থেকেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘উনি অপরাধীদের দমন করার বদলে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ কমিশনারকে এই কারণেই রেখেছেন যাতে এখানে স্বর্গরাজ্য হয়।’