আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই নিয়ে এখন তদন্ত করছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই ১৫ দিন কেটে গিয়েছে। কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি দেশের এক নম্বর তদন্তকারী সংস্থা। সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। এখন সে সিবিআইয়ের হাতে। জেল হেফাজতে আছে অভিযুক্ত সঞ্জয়। এবার আরজি কর হাসপাতালের ‘ক্রাইম সিনে’ কি কোনও বদল ঘটানো হয়েছিল? প্রমাণ লোপাট নিয়ে প্রশ্ন শুরু উঠছে। তারই মধ্যে নির্যাতিতার বাবা ‘চাদরের রঙ’ নিয়ে যে তথ্য সামনে এনেছেন, তাতেই বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। তাঁর দাবি, তাঁর মেয়ের দেহে ঢাকা দেওয়ার চাদর বদলে ফেলা হয়েছে। এবার এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সরাসরি আসরে নামল কলকাতা পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করলেন ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়।
আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে আরজি কর হাসপাতালের মর্গে এসেছিল সিবিআই। এখানে অনিয়ম রয়েছে বলে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে সিবিআই। কিন্তু তদন্ত কতদূর এগোলো তা এখনও জানানো হচ্ছে না। আজও প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সিবিআই দফতরে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন। আজ সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা পুলিশের ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে আগেও বারবার বলা হয়েছে, পুলিশ কখনও ফোন করে আত্মহত্যার কথা বলেনি। আজকের ভাইরাল হওয়া অডিয়ো আমাদের সেই বক্তব্যকেই প্রমাণ করেছে। আর চাদরের রং ছিল নীল। ভিডিয়োগ্রাফি এবং ফটোগ্রাফি করা হয়েছে। আমরা সিজার করেছি নীল রঙের চাদর। সবুজ বা লাল রঙের চাদর ছিল না।’
আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারদের অবসরকালীন ভাতা বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি, দুর্গাপুজোর মুখে সুখবর
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর নৃশংস পরিণতির প্রতিবাদে সরব হন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনেরা। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ। দোষীর ফাঁসির সাজা চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যেই নতুন করে চাদর বিতর্ক তঙ্গে উঠেছে। এই বিষয়ে ডিসি সেন্ট্রালের বক্তব্য, ‘লাল রঙের কাপড় মাথায় দিয়ে ওই তরুণী রাতে ঘুমাচ্ছিলেন। দেহের উপর যে চাদর ছিল তার রং নীলই। সিবিআইকেও আমরা এই কেস ডায়েরি হাতে দিয়েছি। যেখানে নীল রঙের চাদরের উল্লেখ রয়েছে।’ ঘটনাস্থলের যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে নির্যাতিতার দেহ ঢাকা ছিল নীল চাদরে। সংবাদমাধ্যমেও সেই ছবি দেখানো হয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার বাবার দাবি, তাঁরা যখন মেয়েকে দেখতে যান, তখন মেয়ের দেহ সবুজ চাদরে ঢাকা ছিল। চাদর বদলে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি।
বারবার ভিন্ন চাদর পরিবর্তনের বিষয়টি উঠে আসায় প্রমাণ লোপাট করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হতে থাকে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন জানিয়ে দেওয়া হয়, চাদর পরিবর্তন হয়নি। ডিসি সেন্ট্রালের কথায়, ‘আমাদের ডেটা রেকর্ডে নীল রঙই আছে। এখন সিবিআইয়ের কাছে কেস ডায়েরি আছে। সেটা যাচাই করা যেতে পারে। নীল ছাড়া অন্য কোনও রঙের চাদর আমাদের রেকর্ডে নেই। পুলিশের রেকর্ডে চাদরের রঙ নীল লেখা আছে। এখানে সবুজের কোনও উল্লেখ নেই। ঘটনাস্থল থেকে অনেক কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’