আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে গোটা রাজ্যজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। নিরাপত্তার দাবি উঠতে শুরু করেছে সর্বত্র। জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ রোজ রাজপথে মিছিল, ধরনা করছেন। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা ঘটার একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। তবে তদন্তে নতুন কিছু উঠে এসেছে কিনা সেটা সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দেওয়া রিপোর্ট থেকেই স্পষ্ট হবে। তার আগে আজ, রবিবার আবার চিকিৎসা জগতে নয়া মোড়। এবার বিপাকে পড়লেন তিন চিকিৎসক। ডাক্তার বিরুপাক্ষ বিশ্বাস, ডাক্তার অভিক দে এবং ডাক্তার রঞ্জিত সাহার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ দায়ের হল বউবাজার থানায়। তাঁদের বিরুদ্ধে ইমেল করে অভিযোগ দায়ে করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এদিকে সদ্য সাসপেন্ড হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের চিকিৎসক–নেতা অভীক দে। তাঁর ছত্রচ্ছায়াতেই এই দুর্নীতি বেড়েছিল বলে অভিযোগ। অভীকের নাম উঠছে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালের ক্ষেত্রে। আর সন্দীপ ঘোষ তো গ্রেফতার হয়েছেন দুর্নীতির অভিযোগে। এই আবহে অভীক দে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, মুস্তাফিজুর রহমান মল্লিককে সাসপেন্ড করেছে মেডিক্যাল কাউন্সিল। এবার অঞ্জন মণ্ডল–সহ বেশ কয়েকজন জুনিয়র চিকিৎসক অভিযোগ করেছেন এই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ওই জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, অভিযুক্ত তিন ডাক্তার ভয় দেখাচ্ছিলেন তাঁদের। এই মর্মেই বউবাজার থানা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বারাসত–বনগাঁ শাখায় ব্যাপক লেটে চলছে লোকাল ট্রেন, সমাধান কবে? বাতলে দিল রেল
অন্যদিকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন অভীক দে। আবার মেডিক্যাল কাউন্সিলের পিনাল এবং এথিক্স কমিটির সদস্য ছিলেন বিরূপাক্ষ। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন বিরুপাক্ষ বিশ্বাস ও অভীক দে সেমিনার হলে ছিলেন। ওই দিনের একটি ছবি ভাইরাল হয়েছিল। যদিও ওই ছবির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল। তবে হাসপাতালে দাদাগিরি চালানোর বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এই তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিন দখলের অভিযোগ ওঠে অভীক দে’র বিরুদ্ধে।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আজ চিঠি দিয়েছেন বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করেছেন তিনি। তবে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে স্বাস্থ্য দফতর থেকে বিরূপাক্ষকে বদলি করা হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ডাক্তার বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে কাকদ্বীপ হাসপাতালেও। আরজি কর হাসপাতালের তদন্তে আজও সিবিআই দফতরে এলেন এমএসভিপি সপ্তর্ষী চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়ে তৃতীয় দিন তিনি সিবিআই দফতরে এলেন। দু্র্নীতি মামলায় প্রচুর নথি পেয়েছে সিবিআই। সেই সমস্ত নথি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই এখানে আসা বলে সূত্রের খবর।