আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। তা নিয়ে এই বাংলা উত্তাল হয়েছে। রাজপথে নেমেছে মানুষ। জুনিয়র ডাক্তাররা লাগাতার আন্দোলন করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তার জেরে ২৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায় বলে অভিযোগ। এই আবহে দুর্নীতি এবং থ্রেট কালচারের অভিযোগে সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকদের উপর শাস্তির খাঁড়া নেমে এসেছে। তবে প্রেসিডেন্সি জেলে সন্দীপ ঘোষ সেলে আসার পর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে বলে জেল সূত্রে খবর। তাঁর সেলের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে দু’জন কারারক্ষীকেও।
কলকাতায় আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দড়ি টানাটানি এখনও চলছে। সেটা আজ অথবা কাল মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মধ্যে বারবার স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তারপর থেকে ১০ দিন সিবিআই হেফাজতে ছিলেন সন্দীপ। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে আর হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়নি সিবিআই। সুতরাং ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই মামলায় ধৃত সন্দীপ ঘোষ–সহ চারজনকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রে কড়া নিরাপত্তা রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সন্দীপ ঘনিষ্ঠ একাধিক চিকিৎসককে কোণঠাসা করা হল, ব্যানড হলেন অভীক দে
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে অধ্যক্ষই হবে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে থাকবেন নার্স, জুনিয়র ডাক্তার এবং স্থানীয় থানার পুলিশ। রাজনীতি বাদ রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর বুধবার প্রেসিডেন্সি জেলে সন্দীপ ঘোষের দ্বিতীয় রাত কেটেছে। সকাল থেকে দু’বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে সন্দীপের। চিকিৎসকরা জানান, একেবারেই সুস্থ আছেন আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ। নিয়মমতো খাবারও খেয়েছেন সন্দীপবাবু। তবে জেলের খাবার নিয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে। যদিও তাতে পাত্তা দেওয়া হয়নি বলে সূত্রের খবর।
এই বিষয়টি নিয়ে এখন চারদিকে আলোচনা শুরু হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সন্দীপ ঘোষকে। সন্দীপবাবুর সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া বাকি তিনজন হলেন— বিপ্লব সিনহা, আফসার আলি এবং সুমন হাজরা। এই তিনজনকে অবশ্য রাখা হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলের ২৩/৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চিকিৎসার জৈব বর্জ্য দুর্নীতি, সরকারি টাকা নয়ছয়, নির্মাণের জন্য আইন ভেঙে ঠিকাদার নিয়োগ–সহ নানা আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছেন।